পৃথিবীর ডাক শুনব যখন
-----------------------
রমেন মজুমদার 23/01/22


( শ্রদ্ধেয় বরেণ্য কবি নির্মলেন্দু গুণ মহাশয়কে আমার অসীম শ্রদ্ধা নিবেদন, তাঁর কবিতা পড়ে আমি উদ্বুদ্ধ হয়ে কবিতাটি ওঁনার করকলমে নিবেদন করলাম)।
------------
তোমার মধ্যে লুকিয়ে আছি বিন্দুর উপর সিন্ধু,
দেখতে কী পাও; হে ধরণী!লক্ষ ফোঁটার বুদ্বুদের ভিতর, সপ্তরঙের;
রঙধনুর ওই সূক্ষ্ম রঙে।


ডাকলে যখন আমায় কাছে,এলাম চলে-
সঙ্গে আনা শূন্যঝোলা তিল-তুলসিও নেই।
কোথায় থাকবো ? কোন নারীর ওই সঙ্গে ?
নেই বিছানা,নেই রে তুলোর বালিশ।


ডাকলে আমার কাছে,হে পৃথিবী তোমার বুকে রাখতে;
অল্পদিনের তরে,জননীর কোল ভরে ...
জন্মদিলে মানুষ রূপে বানিয়ে দিলে কবি!
ভীষণ ভয় হয়! যেতেই বুঝি হবে ?
ক'দিন পরে, করবে আমায় দেয়াল ছবি?


পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি অদৃশ্য নিয়তি!
ধরবে টেনে পাপের তরীর লাগাম পেলে...
মিথ্যা সে নয়; হতেই হবে চিরন্তনের সাথী।


শেষ করে তখন, কবির দোলায় ওঠার পালা!
ছাড়বে মায়ের কোল,ছিঁড়বে বাঁধন মায়ার;
হবে কিছু বিদীর্ণ শব্দের,করুণ উচ্চারণ-
সেই পৃথিবীর ডাক,
নতুন করে ডাকবে আবার;শেষের ঘাটে যাওয়া।


পুরাতন ঘর ছেড়ে আবার নতুন ঘরে আসব,
সাজানো সব ফেলে;সাজ ঘরের বিছানাও;-
রইবে পড়ে শুঁড়িখানা,বিলাস মহল ঘর ।
তিলেক না দাঁড়াবে,ফুলচন্দনের ফোঁটায়;
দুলবে দোলা;ফুলের ডালা,ধূপের গন্ধ ভরে।


পৃথিবীর ডাক শুনলে পরে অমন করেই যেতে হয়,
সর্বগ্রাসী ক্ষুধাতৃষ্ণা,  থাকবে না আর মনের মত কেউ!
মিটবে ক্ষুধা মোহ ও প্রেম;লোভ-লালসা যত;
চিরন্তনের যাত্রাপথে ছুটব তখন পৃথিবীর ডাক শুনলে ।।


তাইতো আমি আশার মধ্যেই বাঁচতে চাই,
কবির পায়ে শেষনিবেদন সেটুক করতে চাই।
সবাই শুনবে পৃথিবীর ডাক,আসা কিম্বা যাওয়ার (!)
তিলমাত্র সময়,সৃষ্টির যা প্রাপ্য; করে আসতে দাও;
আসব আমি ঠিক তখনি তোমার আদেশ পেলে।।
-----সমাপ্ত।।