আশ্চর্য রকম দ্বিধায় আছি, অলস সময় করছি পার।
একটু হেঁটে আবার থেমে এগিয়ে যাচ্ছি, দু নয়ন বরাবর
কোন কর্মই লাগছে না ভালো, মরিচা পড়েছে মস্তিষ্কে।
অফুরন্ত সময় হাতে; সামনের দোকানেই যাই, ভাবলাম নিমিষে ।


এদিক-সেদিক তাকালাম, ছাড়া দোকানদার কেউ নেই বাড়তি।
তাকে প্রশ্ন আমার, লোকজনের কেনোএতো মহা ঘাটতি?


বললো সে আমায়, যাচ্ছেনা ভালো দিনকাল; জনতার আনাগোনা খুবই কম।
ব্যবসায় জ্বলছে লালবাতি, তাইতো নেই এই চোখে কোন ঘুম।
আফসোস করে তাকে বললাম, আশা করি হবে সব ঠিকঠাক
এইবার একটু হাসিমুখে, এক কাপ চা দেওয়া যাক ।


বসেছিলাম আমি দেয়ালে হেলান দিয়ে, বেঞ্ছের উপর রাস্তামুখী হয়ে।
পায়ের উপর পা তুলে, ডান হাতে কাপ আর দৃষ্টি সামনের দিকে।
চুমুক দিচ্ছিলাম চায়ের কাপে, আকস্মিক একটা ছায়া পড়ল নজরে।
এক পলক দেখেই ভাবলাম, রুপের মায়ায় সেজে কে আসছে আমারদিকে!
ভাবনার অন্তরালে তখনই দিয়ে দিলাম ডুব,
এই সময়ে যে আসছে তাকে জানার ইচ্ছে হচ্ছে খুব।
আমার ভাবনা থেমে নেই বরং বাড়ছিলো, যেমন- কোথা থেকে আসলো এই পরী!


চুপচাপ ঘড়িতে তাকালাম, দেখলাম সাতটা বাজতে আরেকটু দেরী।
কোথায় যাচ্ছে এই মেয়ে, কিই বা তার পরিচয়!
নিজ মনেই ভাবলাম, একটি তার মিষ্টি নাম দিলে কেমন হয়!
কিন্তু আমার পুরো কল্পনা শক্তি, ভাবনা মিশ্রিত রঙ, স্বপ্নিল আভা কোনটি দিয়ে
তার রুপের সমার্থক নাম একটুও নিতে পারছিনা মিলিয়ে ।
প্রথম থেকেই হারিয়ে গেলাম অজানা রাজ্যে, সামান্য ফিরে এলাম তার একটি শব্দে।
বলছিলো যে আমায়, “এক্সকিউজ মি”!
চা পান আগেই হয়েছিলো বন্ধ, আর উত্তর দেয়ার জন্য ছিলো না কোন পরিস্থিতি।


বাক্যটি শুনে তাকালাম তার নয়নের দিকে,
চোখেরও যে মায়া আছে বুঝলাম তখন থেকে।
যেনো প্রশ্ন করছিলো ওই মায়া, কী দেখছো এতো!
সমতুল্য হয় না এই মায়ার, ভাবনায় আমার আছে যতো।
মনোবিদ আমি নই, কারো মনের ভাষা তাই পারি না বুঝতে।
ওই “এক্সকিউজ মি”-এর অর্থ বুঝিনি ;  ঝুঁকিও নিচ্ছিনা খুঁজতে।


ঘোরে আমি তখনও, তা দেখে সেই আবার বললো, “এই যে!”
দিশেহারা অবস্থা আমার, এরকম হইনি আমি কখনো নিজে।
চোখ পড়লো তার চুলের দিকে, তার আননের একপাশ রেখেছিলো যা ঢেকে।
বিস্মিত আমি হলাম সত্যিই, মেঘ কালো ওই কেশদান দেখে।


মেয়েটি পেলোনা তখন পর্যন্ত, আমার কোন সাড়া।
ভেসে উঠিলো তার মুখমণ্ডলের ভিন পাশে, একটু ক্রোধের আভা!
মেকআপবিহীন ক্রোধিত চেহারা দেখে হলাম আমি মুগ্ধ!
আমার ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু এখন এই অপরূপায় সীমাবদ্ধ।
যে কাপটি ছিলো আমার হাতে, তা এবার সে নিয়েই নিলো!
আর বললো, “দেখবেন কতো আর এভাবে!”
কথাটি শুনে লজ্জিত আমি, নিচের দিকে আছি তাকিয়ে।
হার্টবিট আমার বেড়েই চলেছে, প্রতিকূল অবস্থার স্বভাবে।
  
লজ্জামিশ্রিত আমার চেহারা দেখে- সে কি তার মায়া ভরা হাসি!
সেই শব্দে তাকালাম তার ঠোঁটের দিকে, হাসিতো নয় যেনো মধুর বাঁশি!
লিপস্টিক ছাড়া সেই গোলাপি ঠোঁট বর্ণনা করার মতো নয়,
ভাবছিলাম তখন, এই হাসি দেখার সৌভাগ্য যেনো আবার হয়।
ঘোর কেটে যখন আমার সম্বিত  এলো ফিরে,
দেখলাম ছায়াটি এবার যাচ্ছে চলে দূরে।


নিশ্চুপ বসে আছি, বুঝে উঠতে পারছিনা একি ঘটেছে এতক্ষণ!
পাশ থেকে দোকানদার হেসে বললো, “ভালো নয়তো আপনার লক্ষণ!”
তাকে উত্তর দিলাম আমি, “ঠিক ধরেছেন আপনি।
সত্যি কথা বলতে কী, এরকম রূপবতী আগে দেখিনি!”


নাম কি তার জানা হবেনা, হবেনা কিআর কখনো দেখা!
একা একা নীরবে বসে ভাবছি সেই কথা।
তড়িৎ গতিতে লাফিয়ে উঠলাম, মনে পড়লো মেয়েটির প্রস্থানের সময় শব্দটি
কেউ একজন  তাকে ডেকেছিলো, “এই মানিতা!”