আলোচনা ৫৭
গত সপ্তাহের  আগের সপ্তাহের নির্বাচিত কবিতাগুলোর মধ্যে দুটো কবিতা বেশ ভাল লেগেছিল।তার মধ্যে আগে আলোচনা করেছি একটি, আজ অপরটি করছি।  কবি গোলাম রহমান এর ‘নতুন পৃথিবীর সন্ধানে” নিঃসন্দেহে একটি ভাল মানের কবিতা। পাঠকের ভাবনার জগতে আঘাত করার কবিতা। পাঠক একবার নয়, বার বার পড়বে বলেই আমার ধারণা, কবির সার্থকতা এখানেই। কবিতার ব্যাকরণ ভাল বুঝি না, তাই ব্যাকরণ নির্ভর কবিতা আমাকে টানে না, বক্তব্য নির্ভর কবিতা আমাকে ছাড়ে না।


প্রকৃতির সাথে মানুষের আচরণের বিরূপ সম্পর্কের প্রতিফলন এঁকেছেন কবি গোলাম রহমান। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকল প্রাণীর খাদ্য শৃঙ্খলার এক মহাপরিকল্পনা আছে প্রকৃতির হাতে, সে ভাবেই প্রকৃতি নিজেকে ঢেলে সাজান, প্রেক্ষিত বিবেচনায় প্রকৃতির আচরণ প্রাণী জগতের সকলের বেঁচে নিশ্চয়তা দেয় কিন্তু মানব প্রজাতি নিজেদের শ্রেষ্ঠ বিবেচনায় মাঝে মাঝেই অবিবেচকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হন ফলে নেমে আসে নানা বিপর্যয়।


নির্দিষ্ট সময়ে মাঠে মাঠে সোনার ফসল হেসে উঠবে সেটা প্রকৃতির পরিকল্পনারই অংশ, মানুষ কেবল নিমিত্ত কিন্তু আজ মাঠ ভরা লাশ, শকুনের অপেক্ষা, আকাশ থেকে নেমে আসা বিষের পেয়ালা, সবুজ গাছগুলোর পাতা হারিয়ে বিষণ্ণতায় দাঁড়িয়ে থাকা...সবই ইংগিত দেয় প্রকৃতির বিরূপ মনোভাব।


মানব আচরণে প্রকৃতির সব এপারেটারস গুলোও  বিরক্ত এবং বিভ্রান্ত তাই কবি লিখেন- “বিষাদের ছায়া মেখে সূর্য পড়েছে ঢলে, বিরান মাটির পৃথিবীর ঢালে; লুটায়ে আঁচল বিমর্ষ বধূটি, সেঁজুতি জ্বালায়ে যেতেছে চলে ,অনন্ত আঁধার পথে, নতুন কোনোও পৃথিবীর সন্ধানে!”
কবির জন্য শুভেচ্ছা রইলো