জানেনতো, জন্মের পর থেকেই
আমার নামকরণ শুরু,
কন্যাশিশু.
তারপর থেকেই পথ চলা
নামের দীর্ঘ পরিক্রমা .
বালিকা থেকে কিশোরী মেয়ে,
তরুণী থেকে যুবতী !


কাঁচা হলুদ থেকে বাটা হলুদ
গুড়া হলুদ থেকে আস্ত হলুদ !
অমুকের মেয়ে তো তমুকের বোন্
এক্স এর গার্ল ফ্রেন্ড তো প্রেমরাজের প্রেমিকা !
একসময় আমার নতুন পরিচিতি
বাবু শ্রী সত্যানন্দের সতী স্ত্রী !
বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি,
চার দেয়ালের জামাইর বাড়ি,
ফুটবলের লাথির মত
ঘুরতে ঘুরতে কখনই গোল হয়না
" আমার বাড়ি " তে !


আমি শুধু একটা
রক্ত-পিন্ড মাংসের দলা,
দোকানে সাজানো
ড্রেসিং ডল !
সতীত্বের সত্তার আবরণে
ইচ্ছেমত পোশাক বদলানো
সেটাও আমার নয় !
কপাল আমার ছিল
কিন্তু সিদুর ছিল সত্যবাবুর;
হাত আমার কিন্তু
শাখা ছিল সত্যানন্দের !
ঢেউ খোলানো চুল আমার
কিন্তু খোপার ফুল,
গুজে দিত পতি পরমেশ্বর,
পায়ের নুপুর, মুখের সাজ
মাথার টিকলি , কোমর বিছা
কিছুই আমার হয়না !
নারীত্বের তকমা আটা
অসহ্য ক'টা দিন বাদে
উর্বর জমিতে চাষাবাদ
তা ও আমার ইচ্ছেতে নয় !
বংশধারার ঐতিহ্য রক্ষার
দশমাস দশদিনের প্যাকেজ
সেই কষ্ট ও আমার নয় ....


ঘরভর্তি জোকারের আওয়াজে
শোনা যায়-
" সত্যবাবুর ছেলে হয়েছে , মিষ্টি আনো ".
সময়ের আবর্তনে কালের বলিরেখায় শুনি
" কই গো মানিকের মা, তোমার কাছে
দুই-তিনটা কাঁচা হলুদ অইব ? "
" মানিকের মা, তোমার কাছে কিছু
টাকা হবে ? "


দায়িত্ব আর কর্তব্যের আড়ালে
চাপা পড়ে যায়
বাবা-মার দেওয়া নাম " ভাগ্যশ্রী ".
শুধু আমার মানিকের কাছে আমি " মা ".
একজন নিঃস্ব নারীর হাতে
মেনোপজের সীল দেওয়া
অপূর্ণ মানুষের সনদ !