গতকাল রাত্রে কবিতা লিখবো বলে বসলাম
হঠাৎ লিখার ভাবনা গেল হারিয়ে
নিদ্রায় চোখদুটো যেন যাচ্ছে জড়িয়ে
মাথার ভিতর ঘুরপাক করতে লাগলো
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার একরাশ মেঘ
তাই ভাবলাম কমিয়ে দেব কবিতা লিখার বেগ।
সামনে তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা
নানা নিধি ভাবতে ভাবতে
কখন বন্ধ হয়ে পড়েছে চোখের পাতা দুটা।
সকালে পরিস্কার হয়ে পড়তে বসার আগে
আমার প্রতিনিয়ত একটা অভ্যাস
ফেসবুক খুলে একটু আড্ডা দিয়ে তবে ব্যস।
ফেসবুক খুলতেই চোখে পড়লো
সলিল সমাধী শিক্ষিকার খবরের লিঙ্ক
লিঙ্কের উপরে লিখা
স্বামী মৃত স্ত্রীর স্মৃতিচারণার অধীন।
খবরটা পড়তে শুরু করলাম
কারণ দৌলতাবাদের সলিল সমাধিতে
শিক্ষিকা সুফিয়া মুমতাজের নাম শুনেছিলাম।
খবরের পাতায় স্বামীর বুকফাটা বয়ান
বুঝতে পারেনি সে বিধাতা মারবে অসহ্য বাণ
যে বাণে ছিন্নভিন্ন হবে হৃদয়ের আকাশ খান।
হৃদয় আকাশের আসেনা বসন্তের পুলক ঘ্রান
বেঁচে থেকে পৃথিবীটাই লাগছে বেমানান।
দুই বছরের ছোট্ট মানিশ
ফোনে মহিলা কণ্ঠ পেলেই জেদ ধরে
মাকে আমার ডেকে দিস.....
মানিশের মাথা নেড়ে কেহ শুধায় মা কোথায়?
অবুঝ মানিশ উত্তরে বলে
বাড়ি আসছে বাসে, আছে রাস্তায়।
এই কথা শুনে হিতাকাঙ্খী সজনের মনে
কাঁচা ঘায়ে নুনের ছিটার যন্ত্রণা ছড়ায়।
আর ওই সাড়ে সাত বছরের নাবালিকা মেয়ে
সে সব বুঝতে পেরেছে মায়ের খবর পেয়ে
দৌলতাবাদে সলিল সমাধি হয়েছে
কর্মস্থলে যেতে গিয়ে।
মাঝে মাঝে ঘুমের ঘোরে কাঁদে
ছোট্ট মানিশকে বুকের কোণে আঁকড়ে ধরে।
বাবার কথায় যখন কান্নার স্বর ধরে
মেয়েটা চোখ বাঁকিয়ে বাবাকে পরখ করে।
দাম্পত্য জীবন কেটেছে দশটি বছর ধরে
স্বামীর উপর কথা বলেনি
যে কোন পরিস্থিতিতে পড়ে
প্রতিটি মুহূর্ত বেঁধে রেখেছে অনুগত্যের ডোরে।
আজ সেই পাখি উড়ে গেল বন্ধন ছিড়ে
তাই কাটানো স্মৃতি গুলো যখন আসে ফিরে
রাতের অন্ধকারে বালিশ জড়িয়ে
ডুকরে ডুকরে কান্না করে।
আর খোদার কাছে মুনাজাত করে
সুফিয়াকে যেন স্বর্গে নাজিল করে।
প্রতিবেদনটা পড়ার সময়
আমিও অনেক অশ্রু ঝরিয়ে ছিলাম
আর খোদার কাছে দোয়া করছিলাম
পৃথিবীর বুকে কোনদিন
কোন সুফিয়া মুমতাজ
কারো বুক ফাঁকা করে
না যেন স্বর্গে বিচরণ করে।।
(কৃষ্ণপুর,বৈষ্ণবনগর,মালদহ)