যদি কোনো এক শীতসন্ধ্যায়
মনের গহীনে উড়তে থাকে পোড়া স্মৃতির গন্ধ,
যদি বুকের গভীরে অদৃশ্য এক শূন্যতা
অবিরাম শব্দ তোলে,
তবে নিঃসঙ্কোচে ফিরো।
যে কোনো অজুহাতে—
একটা ভুলে যাওয়া নাম ধরে,
একটা বাতাসে ভেসে যাওয়া গান শুনে,
অথবা নিছকই এক মায়াবি বিকেলের ছলনায়।

ধরো, যদি তোমার ফেরা হয়—
আমার শেষ বয়সের অন্তিম প্রান্তে,
যেখানে দিন গুনে রাখা হয়,
আলোর অপসৃয়মান রেখায় চোখ রাখি প্রতীক্ষায়,
তবে এসো।
সেই সময় যদি তোমার চুলের মাঝে রুপোলি নদী বয়ে যায়,
চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা,
চামড়ায় ভাঁজের গভীর রেখাচিত্র,
হাঁটুর দুর্বলতায় লাঠির ওপর ভর করা শরীর—
তবুও এসো।
কিংবা যদি শয্যাশায়ী হয়ে পড়ো,
শেষের দিনগুলো হয় শূন্য চোখে শূন্যতার দিকে চেয়ে থাকা,
তবুও সংকোচ কোরো না।
ফিরতে ইচ্ছে হলে ফিরো,
ডাক দিও,
যে কোনো অজুহাতে,
শুধু যেন আমার নাম ধরে ডাকো।

জানো, শরীরের মোহ তো ক্ষণিকের খেলা,
দুটো হাতের উষ্ণতা, দু'চোখের ভাষা,
সেগুলো ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যায়,
কিন্তু মনের মায়া?
তা তো এক অনন্ত আকার—
একবার জন্ম নিলে তার বিনাশ নেই।
তুমি সেই মায়ারই প্রতিচ্ছবি,
আমার হৃদয়ের শিল্পশালায় আঁকা চিরকালীন চিত্র।
তোমাকে মুছে ফেলতে পারি না, পারবো না।

তাই যদি কখনো একলা দুপুরে,
কিংবা নিশীথ রাতে শুনতে পাও—
তোমার নামের প্রতিধ্বনি বাতাসে মিশে গেছে,
যদি মনে হয় কোনো এক অন্তর্হিত ব্যথার আঙুল
তোমার হৃদয় ছুঁয়ে যাচ্ছে নিঃশব্দে,
তবে ফিরে এসো।
আমি বাতাসে কান পেতে থাকব—
যদি কোনো দিন, কোনো সন্ধ্যায়,
তোমার পদধ্বনি ফিরে আসে
আমার অপেক্ষার দুয়ারে।