জীবন সে তো বিস্তর মৃত্যু দিয়ে গড়া।
কিরূপে? পিতার মস্তকে ঝরে চন্দ্র কিরণ ধারা।
অজুত কোটি আলোক কণা চলে তীব্র বেগে ধেয়ে
জননী গর্ভে কেবল একটি কণা আসন লভে যেয়ে।
শুধু একটি কণা বিজয়শ্রীর তিলক পরে ভালে
আর কণারা রণত্যাগী কিম্বা নাচে মৃত্যু-ছন্দ তালে।
একটি কণা হয় সমর জয়ী অন্য কণাদের মেরে
অথবা আর কণারা হয় আত্মত্যাগী একটি কণা তরে।
যে ক্ষুদ্র বীর মাতৃগর্ভে বাড়ে কুসুম রূপে
তারে বাঁচাতে কত লোহিত মিছিল মৃত্যু সোপানে জীবন সপে।
চন্দ্রকণা পুষ্পরূপে পঞ্চভূতে প্রস্ফুটিত জননী বলয়ে
কত রক্তমাংস-সুখানুভুতি মরন পেয়ালা লভয়ে।
কত রাতের স্বপ্ন চাঁদ ঢাকে অমানিশার মেঘে
সহস্র আবেগের যবনিকা ঘটে একটি আশের পরশ মেগে।
দশটি মাস অগণিত ক্ষুদ্র সুখের সমাধি রচনা করে
অবশেষে তেজস্বী বীর ভূমিষ্ঠ হয় অবনী পরে।
যুদ্ধজয়ী হলেও বীর, অগণ্য মৃত্যুদাতা - কাঁদিলে ক্ষণ।
শত ব্যথা সয়ে হাসে মাতা, এসেছে নাড়ি ছেঁড়া ধন।
তারপর প্রতি পলে আরো কত জীবনের বিনাশ ঘটে।
প্রসূনেরে জোগাতে আহার কত মৃত্যুর সমাহার জোটে।
জীবন সে তো প্রকাশিত মরনেরে ধারন করে
অনুক্ষণ সূর্য আভা বাঁচে অজস্র মৃত্যুরে সাক্ষী করে।
চারিদিকে অনন্ত ঘুমের অবারিত বিছানা,
মৃত্যু পত্র-পুটে আছে সত্য জীবনের নিশানা।
জীব সদা দোলে শঙ্কার দোলাচলে মহা চিন্তায় ডুবে
এই আছি এই নেই মৃত্যু স্তুপের রণাঙ্গন ভবে।


সব শেষে একদিন মহা ঘুমে আবৃত হবে নয়ন-
সব মোহ-মায়া মুছে যাবে, হবে সব লীলা সমাপন।