যে তোমায় অসুন্দর বলে, তার চোখ নেই-
চোখ নেই তার দেখিবার।
যে তোমায় অসুন্দর বলে, বেরসিক সে-
চোখ মেলে দেখেনি প্রকৃতি কখনো।
সে আকাশের বিশালতাকে বোঝেনি কখনো
শোনেনি সমুদ্রের গর্জন, ঢেউয়ের ছন্দ ;
শ্যামল বনানীর গহীনে হারাতে শেখেনি সে।
উদাস হাওয়ার দিনে গুঞ্জরিত মধুপের
ফুলের বুকে মুখ লুকাতে দেখেনি সে।
দেখেনি কচি সবুজ কলাপাতায় মুক্তোর মত
টলটলে ঝলমল করা একবিন্দু শিশির!
ভরা পূর্ণিমার চান দেখেনি সে ফাগুনের সন্ধ্যায়
কিংবা দেখেনি কভু ঝুলন্ত সরু-ফালি চৈতি চাঁদ।
দূরন্ত সমীরণে অলকের নাচন দেখেনি সে
লজ্জারাঙা কপোলের উঠোন 'পরে।
বসন্তে সে শ্রবণশক্তিহীন, শোনেনি কুহুতান
চিরহরিৎ অরণ্য দেখেনি সে, দেখেনি কখনো
হাজারো ফুলের উদ্যান, যেখানে বায়ু তরঙ্গে ছোটে।
শরতে শুভ্র কাশ, আকাশে সাদা মেঘ দেখেনি সে
শুভ্রতার প্রতীক দেখেনি পায়রার বিমুক্তকরণে;
স্বাধীনতার সুখ-সৌন্দর্য দেখেনি খোলা আকাশে -
মুক্ত বিহঙ্গের ডানায় ডানায়।
নদীর বাঁক দেখেনি সে, দেখেনি কোনোদিন
সবুজ ক্ষেতে শ্যামলিমার মায়া।
হঠাৎ কখন ঘুম থেকে জেগে দেখেনি
রবির কিরণে ফুলেরা কেমন পাপড়ি মেলে চায়!
কখনো নক্ষত্রহীন ঘোর কালো সন্ধ্যার সৌন্দর্য
দেখেনি সে অভিমানে ঝুলে থাকা চিবুকে-
কখনো শব্দবিহীন ঝর্ণা থেকে বয়ে চলা নদীতে
নিজেকে ডুবিয়ে শুদ্ধ করেনি সে
আলোর তীব্রতা দেখেনি সে, দেখেনি ক্ষুরধার স্রোত
দেখেনি পর্বতশৃঙ্গে বাসনার কলি ফুল হয়ে ফোটে।
অন্ধ কি বোঝে আলো আঁধারের তফাৎ!
জগতের সব সৌন্দর্য শুধু তোমার মাঝেই নিহিত
এই অমোঘ সত্য কেবল আমার কাছেই উন্মোচিত
আর কেউ জানুক আর না-ই জানুক,
আমি জানি- তুমিই সবচেয়ে সুন্দর,
আমার প্রিয়তমা আমার অপরাজিতা।।


২৯/১২/২৩ ইং, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।