কত রাত ভালো করে ঘুমাইনি আমি
রাতজাগা পাখির মত জেগে থাকি
কান পেতে শুনি এ শহরের বোবা কান্না।


অজস্র ক্ষতের ব্যাথায় কুঁকড়ে ওঠে এ শহর
কাছের দূরের দেয়াল থেকে প্রতিধ্বনি ওঠে
হাজারো কষ্ট জোট বেঁধে উল্লাসে মাতে।
আমার কানে ডঙ্কার মত বেজে ওঠে
এসবের ধ্বনি প্রতিধ্বনি।


একাকিত্বের আড়ালে বিরাট বৃদ্ধাশ্রম শহরে
ধ্বনিত হয় মিথ্যে সুখের ঝুমুরঝুমুর শব্দ।
অতি প্রোগ্রেসিভ সমাজব্যবস্থা অঘোষিত
বৃদ্ধনিবাসের ঘন্টা বাজায় রোজ আর
আপনজনের হৃদয় ভাঙ্গার শব্দ শুনি আমি।


স্বপ্নেরা লুটোপুটি খায় ধূলোর মাঠে
পায়ের তলায় শুকনো পাতার মর্মর ভেসে আসে
সিলিঙে ঝোলে দরিদ্রের স্বপ্ন অথবা
অনেকের চোখে উচ্চ আকাঙ্খার বিলাসিতা
আমার কানে আসে শেষ নিঃশ্বাস ফেলা শব্দ।


ফুটপাতে ব্রীজে কম্বলের তলায়
অভাবে স্বভাবে ধ্বনিত হয় জীবন বাঁচাতে
জীবনের অস্তিত্ব ভাঙ্গার শব্দ।
পাথর প্রমাণ দেহের অশ্রু গড়ানো শব্দ আসে না
আসে পাথর ঘষায় অগ্নি স্ফূলিঙ্গের শব্দ।


লক্ষ আহাজারির শব্দ শুনি রাতের শহরে
আমার ছোটখাটো দুঃখরা- যারা চিৎকার
করে ওঠে ক্ষণে ক্ষণে, তারা মুখ লুকায়
ধীরে ধীরে চোখের পাতা লেগে আসে ক্লান্তিতে
আবার চমকে জেগে উঠি কোনো এক
ধ্বনিত বেদনার করুণ কান্নার সুরে।