ফাগুন এলে আগুন লাগে লাল পলাশের ডালে
ফাগুন এলে পদ্মাবহে আমার মায়ের গালে।
তের'শ আটান্ন সালের সেইনা ফাগুন মাসে
খোকার বুকে তাজারক্তে ভাষার ভেলা ভাসে।
কুঁমড়ো ফুলেরবড়া আজো ঊনুনে ছাই হয়
ছেলে আসার জন্যে মায়ে রয়'যে প্রতিক্ষায়।
মায়ের বুলি রাখতে অটুট করল খোকা পণ
তাই তো সেদিন হারিয়ে যায় ঐ দুঃখিনীর ধন।


ফাগুন এলে আগুন লাগে কৃষ্ণচূড়ার দেশে
ফাগুন এলে বোঠান চলে জাত পাগলীর বেশে।
এই ফাগুনে পেয়েছিল সে লাল টুকটুক শাড়ি
আনন্দে তার দিন কেটেছে সারা শ্বশুর বাড়ি।
স্বামী যাবে শহরেতে আনবে আলতা চূড়ি
নববধূর মনে তখন উড়ছে রঙীন ঘুড়ি।
সেই'যে পতি চলেগেল আর এলনা ঘরে
সিঁথীর সিদুর মুছেগেল সারা জনমের তরে।


ফাগুন এলে আগুন লাগে ঐ শিমুলের বনে
ফাগুন এলে কষ্টঝড়ে আমার দিদির মনে।
বাংলায় সেদিন চেপেছিল দাড়কাকের'ই ভাষা
দিদিকে যে বলবে দিদি এইতো ভাইয়ের আশা।
কলেজ ছুটির পরে ভাইয়ে আসবে ফিরে বাড়ি
দিদির জন্যে কিনে আনবে নতুন পাটের শাড়ি।
সেই ভাইটির বুকের মাঝে আসলো মরন ধেয়ে
দিদি আজ ও বসে আছে ভাইয়ের পথটি চেয়ে।

        (  "বাংলা আমার ভাষা" )