জগতে জগতে দ্বারে দ্বারে তোমার খুঁজে পথ বেড়াই, তোমার খুঁজ কোথায়?
ঝর্ণা চায় তোমার দেহের চন্দন গন্ধ তার জলধারায় মিশাতে।
অরণ্য চায় তোমার হাতের রেখার স্পর্শ লাগুক গাছে ঘাসে।
সমুদ্র চায় সৈকতের বালির বুকে তোমার রাজমহিষী পদচিহ্ন।
যৌবনা বর্ষা চায় তোমার স্নানের জলে হোক জলতরঙ্গ।
বসন্ত বাতাস তোমার লক্ষ্মীছাড়া চুলের স্বাধীনতা হতে চায়।
পদ্মফুল বলে তোমার অতলান্তিক চোখ দখলের অধিকারের আন্দোলনটা সমাপ্ত করতে।
বিকেলের রোদের ইচ্ছে তোমার ছায়ার গাঢ়রূপ ধার নিতে।
প্রজাপতি চায় তোমার কপালের সূর্য টিপের ন্যায় নিজেকে সাজাতে।
বাবুই পাখি জানাতে চায় তোমার পলকের আলোড়নে তার বাসা দোল না খেলে ঘুম আসেনা।
বেলেমাটির এলোপথ করেছে শপথ আর কোনো পথিকবরকে তার বুকে চলাচল দিবেনা।
দিগ্বিদিক দিগন্ত খুঁজে, তোমার আয়ত চোখের ইশারা যেন তাদের অসীমতায় সীমারেখা টানে।
পাহাড়ের কাতর নিস্তব্ধতা চায় তোমার নুপুরের ঝংকার করুক তাকে ভেঙ্গেচুরে চুরমার।
উদাস দুপুরবেলা একেলা মুহ্যমান তোমার অপেক্ষায়।
বাগান জানতে চায়,
তুমি কাকে প্রথম স্পর্শ দেবে?
কলি-কে না ফুল-কে?
লজ্জাবতী গাছ শুধু স্পর্শে সংকুচিত হয় না, তোমার বাঁকা চাঁদ ভ্রু দেখে দেখে সে এমন করে।
কাক আর কোকিলের একতা শুনেছ কি?
তোমার বিরহে আগামী সপ্তাহে কাক আর কোকিল বৈঠকে বসবে উঠানের কামরাঙা গাছে।
আর কিছু প্রহর অতিক্রান্ত হলেই কাকতাড়ুয়া ধৈর্য হারিয়ে মিষ্টিকুমড়ো বাগান ছেড়ে চলে যাবে।


ইটভাটার ধোঁয়া বিষাক্ত, তাই অনেক উপরে তুলে আকাশে উড়িয়ে দিতে হয়।
তোমার বিরহ মানে আমার হৃদয় জমিন একটা ইটভাটা।
এ ইটভাটার ধোঁয়া আকাশে উড়ে না,
হৃদয় আকাশে জমাট হয়ে থাকে।
বিষাক্ত ধোঁয়ায় আমি মরতে না-ও পারি।
কিন্তু জমাটবদ্ধ ধোঁয়ার ঝাঁজ ও ধারের আঘাতে বাঁচতে পারব না।
দয়া করে মরণ বিরহে ইতি ঘটাও।