বিশ্বাস একটা আশ্চর্য ভাষা বললে হয়ত কম হবে না , পৃথিবীর সভ্য সমাজবাদীদের কাছে। আর অপরাধ জনপ্রিয় স্পর্শনীয় প্রিজন, কারন বিশ্বাস এখন আর কোন মানবতাবাদীদের মনে ধর্মে, কর্মে নীতিগল্পে ও দুমুখো সমাজপতিদের শিক্ষার, ইত্যাদি ধারে কাছে আসেনা। অথচ ধার্মিকদের ধর্মের কোন ব্যাখ্যার অভাব নেই জগৎ জুড়ে। অর্থাৎ সভ্যতার শান্তির বাণী নাকি ধর্মান্ধদের ধর্মীয় গ্রন্থে এবং তারা সর্বদাই শান্তির জগতের অধিকারী । এও নাকি সব শান্তি প্রশান্তি ধর্মের মাঝেই লুকানো ! এই অন্ধ শক্তি প্রাচীনকাল থেকেই, অন্ধ বিশ্বাসীদের। তার একটা ছোটখাটো উদাহরণস্বরূপ দেওয়া যেতে পারে। " দেড় যুগ পেরিয়ে গেছে, ভারতের অযোধ্যায় নির্মিত ষোড়শ শতকের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে ফেলেছে ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ওই ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় ভারতে হিন্দু-মুসলিম জাতিগত দাঙ্গায় নিহত হয় দুইহাজারের বেশি লোক, যাদের বেশিরভাগই ছিল মুসলিম। তবে মসজিদ নিয়ে মূল বিতর্ক তথা আইন-আদালত শুরু হয় ৬০ বছর আগে, ১৯৫০ সালে। বাবরি মসজিদের ২.৭ একর জমি কাদের? বাবরি মসজিদ নির্মাণের আগে; অর্থাৎ ১৫৩৮ সালের আগে জায়গাটিতে কি রাম মন্দির ছিল? ১৯৪৯ সালের ২২ ডিসেম্বর মসজিদের ভেতরে রামের মূর্তি এল কোত্থেকে, আগেই ছিল নাকি রাতের আঁধারে এনে বসানো হয়েছে? দীর্ঘ ৬০ বছর পর ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ মামলার রায় হলো বৃহস্পতিবার। রায় যাই হোক।"সেই কাজটা ভারতের মহা ধর্মান্ধদের ধার্মিকতা ছিল । এখন যাই বাংলাদেশের বাবরি মসজিদের কাহিনী অবলম্বনে। হয়ত পুরোপুরি মনে নেই ইতিহাসটা, কতটুকু ক্ষতি হয়েছিল জাতি ও রাষ্ট্রের। মুসলিম সম্প্রদায়ের উগ্রমৌলবাদীরা, কিছুটা প্রহর যেতে হয়ত সময় লেগেছিল, কিন্তু ধার্মিকরা তাদের চসমখোর আচরণে দ্বারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান চুরমার করতে এতটুকুও সময় লাগেনি। হিন্দু ধর্মের উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ, প্রতিমা সহ মন্দির ভাঙ্গচুর হত্যাযজ্ঞ এমনকি অন্য ধর্মাবলম্বীদের উপরও ধর্ষণ মানসিক নির্যাতন লুটপাট ধ্বংস চলতে থাকে বেশ কিছুদিন। এটাও বাংলাদেশের মহাধার্মিকদের ধর্ম পালন ছিল। এখন যদি বলতে যাই শুধু প্রয়াত "হুমায়ূন আজাদ স্যারের"কথাটা বলব" মসজিদ ভাঙে ধার্মিকেরা, মন্দিরও ভাঙে ধার্মিকেরা, তারপরও তারা দাবি করে তারা ধার্মিক, আর যারা ভাঙাভাঙিতে নেই তারা অধার্মিক বা নাস্তিক।" পৃথিবীজুড়ে যদি এর কোন ব্যাখ্যা দেওয়া যেতে পারে, সেইটা শুধু মহা ধার্মিক রাজনীতি বীরদের কাছে কাম্য। প্রাচীনকালের কথা যদি বলি প্রথমত, প্রাচীন জংলি কসাইদের, রাজ্যত্ব তুলে ধরতে হবে। রাজ্যত্ব বলে কথা ছিল, যেখানে অপরাধ কোন বিষয় নয়। রাজার ইচ্ছে মতই ন্যায় অন্যায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। অপরাধীর আত্মসমর্পণ করার সুয়োগ ছিলনা অথবা অপরাধী আদৌ অপরাধী কি না সেটাও সিদ্ধান্ত নিতেন রাজা নিজে। এখন পাথরযুগ, লৌহযুগ, অন্ধকারযুগ পেরিয়ে আধুনিক সভ্যতায় আমাদের আবার শুধু মাত্র এদেশে ধর্ম (অন্ধকার) যুগের উত্তরণ ঘটেছে। যেখানে পৃথিবীতে নব্বই ভাগ মানুষ বিজ্ঞানকে সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে, সেইখানে বাংলাদেশের নব্বই ভাগ মানুষ ধর্মকে পুঁজি করে দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাংঙ্গালী বিশ্বের কাছে জঙ্গি হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে। দেশ এখন মধ্য আয়ের দেশ, হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও আসলে বাংলাদেশ এখন বর্তমান পাকিস্তানের মত জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে। আমরা ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসেবে অনেক গুলো দেশকেই চিনি। যেমন ইরান, সৌদি, ভারত সহ আর অনেক দেশই আছে, যে দেশে বেশির ভাগ মানুষই ধর্মীয় চেতনায় বিশ্বাসী কিন্তু তাদের রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ঠিকি অব্যাহত রয়েছে। কারণ সে দেশ গুলো বিশ্বাস করে, "ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার" যে দেশে ধর্মীয় গোরামিকে আকঁরে ধরে বেঁচে থাকে, সে দেশ কখনো উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে পারেনা। ধর্ম এবং বিজ্ঞান তৈল ও জলের মত। তৈল জল যেমন একি সাথে মিশে না ঠিক তেমন ধর্ম বিজ্ঞান বৈরী পরিবেশে বিদ্যমান। একজন মানুষ যখন ধর্মকে বিশ্বাস করে জীবনযাপন করে, তখনি সে সামাজিক ভাবে মানব উন্নয়নে বাঁধাগ্রস্থ হয়। যেমন ভাববাদী কখনই নিজেকে মানুষ ভাবতে পারেনা, অন্য দিকে বস্তুবাদী মানুষ নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকে। সে কারণেই বস্তুবাদীদের জীবনে মানবিক ও সামাজিক উন্নয়ন দেশ ও মানব কল্যাণে অগ্রগতি লাভ করে। মূলত কথা হল ধর্ম বেঁচে আছে কিছু মানুষের স্বার্থসিদ্ধ লাভের জন্য। তারা শূন্যকে আকঁরে ধরে বেঁচে থাকেন নিজেদের লাভের আশায়। অন্যদিকে বিজ্ঞানে বিশ্বাসী মানুষ গুলো সব সময়ই যে কোন বিষয়ে সঠিক তথ্য আবিস্কারে দৃঢ়। বিজ্ঞান বিশ্বাসী মানুষ গুলোকে যারা নাস্তিক উগ্রমৌলবাদী বলে আখ্যায়িত করেছেন তারা নিজেরাই জানেনা এই নাস্তিকদের বদৌলতে পৃথিবীতে টিকে আছেন ধর্মের শিরোপা নিয়ে। পরিশেষে প্রয়াত ভারতীও বিজ্ঞানী "আবুল কালাম আজাদ'র বিখাত উক্তি উল্লেখ করে বলবো " পৃথিবী অচিরই ধ্বংসের দিকে ধাবিত। পৃথিবী বাঁচাতে হলে, পৃথিবীর সকল সৃষ্টি তথা পরিবেশ রক্ষায় মানুষকে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে " যারা এই বিজ্ঞানীর কথায় বিশ্বাস করেন তারা নিশ্চই মানবেন, পৃথিবীকে বাঁচাতে কোন ধ্যান সাধনায় বা জঁটা ধারীর মন্ত্রপূত ফুঁতে কাজ হবেনা। পৃথিবী রক্ষা করতে হলে মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে, নাস্তিকদের এগিয়ে আসতে হবে অভিজিৎকে, জাফর ইকবালকে, হুমায়ূন আজাদ, আইনস্টাইন, স্টিফেন হকিংকে এগিয়ে আসতে হবে। গোলাম হোসেন নিজামি, রবি শংকর, জাকির নায়ক এর ধর্ম তথ্য কখনোই পৃথিবী রক্ষা করতে পারবেনা। পৃথিবী রক্ষায় ধার্মিক নয় মানুষের প্রয়োজন। জঙ্গিবাদ নয় গণজাগরনের প্রয়োজন। ভয় নয় একতার প্রয়োজন।
( ডাকুর কথা গুলোর সাথে যদি কোন ধর্ম ধার্মিকদের বা রাষ্ট্রের মানুষের কোন গল্পের কাহিনী অথবা হলিউড, বলিউড, টালিউড, কিংবা ঢাকাইয়া ছায়াছবির সাথে যদি মিলে যায় তাহলে মনে করবেন এই লিখাটা ডাকুর কাছ থেকে নেয়া।)