আমি আমার বাংলার কথা বলছি
৭১-এর পাঁচ লক্ষ শিশু ,তিরিশ লক্ষ শহীদের
আত্মদান ও বীরাঙ্গনা চার লক্ষেরও বেশি মা- বোনের
ইজ্জৎ হারিয়েছিল অসৎ ঘাতকদের কাছে...
যখন সেই ইতিহাস গুলো মগজে দ্রূতগামীতে ঘোরপাক খায়
তখনি মাথাটা ঘৃণার আগুনে ফুলকি হয়ে উঠে
'পাক' অকৃতজ্ঞ কীটাণুদের স্মরণ করতে চাচ্ছিনা ,
এরা পৃথিবীর শান্তির ধর্মগ্রন্থের কদর্ষ বংশধর...।
আমি স্বাধীন দেশের কথা বলছি
আমি আমার স্বার্থপরতার কথা বলছি
নিজেই যখন খুঁড়ে খাই নিজেদের সতীত্ব
তখন আর কাকে দেব দোষ পরাধীনতার ?
দীর্ঘ চৌষট্টি বছর পেরিয়ে
আমার মুখের ভাষা আজও যাযাবর !
এমনি এক স্বাধীনতা আমার
এমনি এক সোনার দেশের কথা বলছি ।
প্রিয় বাঙলাদেশ , আমি তোমার কথা বলছি
"আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ "র মত করে বলছি
প্রিয় ভাষা শহীদরা তোমরা যারা এনে দিয়েছিলে স্বাধীনতা ,
আমরা তোমাদের সম্মান ,রাখতে পারিনি
রাখতে পারিনি ভাষা জননীর সতীত্ব ।
আমাদের তোমরা ক্ষমা করনা ,
রফিক শফিক জব্বার বরকত সালামেরা.....
১৯৭১ সালে মোট জনসংখ্যার ১৮ দশমিক
৪ শতাংশ ছিল হিন্দু, ১৯৮১ সালে তা এসে দাঁড়ায়
১২.১ শতাংশে, ১৯৯১ সালে ১১ ও ২০০১ সালে ৯ শতাংশ।
বৌদ্ধদের সংখ্যা ০৭ ও খ্রিস্টান ০৩ শতাংশ।
পচাত্তরের পর ৮২- থেকে ৯০- স্বৈরাচারদের
আমলে সমগ্র দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করে
শত শত মন্দির, গীর্জা, পেগডা ধ্বংস করা হয়েছিল।
সেদিন সাম্প্রদায়িকতার কারণ ছিল ভারতের উগ্রমৌলবাদের...
বাবরি মসজিদ ,মন্দির-মসজিদ ধর্মান্ধ এগুলো কারণই চলে আসে,
সেদিন শ্রদ্ধাস্বরূপতায় প্রাণ হারিয়েছিল দুইহাজারের বেশি লোক ভারতে,
এটাই মূল যোগ্যতা ছিল ধর্ম চুষাখোরদের ।
বাঙালী ধর্মান্ধদের ধর্মগ্রন্থ গুলো ঠিক ,
চাপাতি-হত্যার লাইসেন্স আছে...।
আমরা হত্যা-লাশের হিসেব মিলাতে
অথবা কাঁধে নিতে ক্লান্ত নেই বাঙালী ।
শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্র ,
কিন্তু দেখছি বাস্তবে তা এখনো মুক্ত হয়নি !
নির্যাতন-অত্যাচার-ধর্ষণ, হত্যা ,উচ্ছেদ ,জবরদখল অবাধে হচ্ছে দেশে ।
২০০৮ সালে " লীগ স্যাকুলার " হিসেবে জাতিকে বুঝিয়েছিল দলটি,
ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামাত আমলে সংগঠিত নির্যাতনের
বিশ হাজার ঘটনা চিহ্নিত হয়েছিল, বিচার হবার প্রত্যাশায়...
কোথায় বিচার একটাও হয়েছে ? হয়নি এরা বিধর্মী মানুষ ছিল বলে ।
প্রতিটা রাজনীতিক দল কুঁকড়ে যায় ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ভয়ে ,
এগুলো বলতে নেই ,বাঙালীর গণতন্ত্র আহত হয় ।
বাঙালীর দিনকাল ভালই কাটছে সমস্যা হয়না কোথায়...
এভাবেই স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার করে দিয়েছি আমরা ।
এমনি এক স্বাধীনতা আমার
এমনি এক সোনার দেশের কথা বলছি ,
প্রিয় বাঙলাদেশ ,র্নিবিঘ্ন পদ্মা ,মেঘনা ,যমুনা.বুড়িগঙ্গা ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ
মাইল আমি তার কথা বলছি ।
দেশে শিশু ধর্ষণের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে..
২০১২ সালে ৮৫টি, ২০১৩ সালে ১৫০টি, ২০১৪ সালে ১৯৯টি
এবং ২০১৫ সালে ৫২১টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম জানিয়েছে, ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ (জুলাই) পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে দেশে ৯৬৮টি শিশুকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ সালে শিশুহত্যার হার আগের বছর ২০১৩ সালের চেয়ে প্রায় ৬১ শতাংশ বেশি ছিল। বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে। বিভিন্ন ধরনের অপরাধ, সর্ব ক্ষেত্রে দুর্নীতি, শিশু ও নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন, বিদেশে চাকুরীর নামে মানব-পাচার ও দাস ব্যবসা, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের উপর পুলিশী নির্যাতনের মত এখন গুম ও অপহরণের শীর্ষ তালিকায়ও বাংলাদেশের অবস্থান নির্ণীত হয়েছে। বাংলাদেশের এ নৈরাজ্যকর চিত্র বিশ্বে দেশ ও জাতির মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে।
গণবিধ্বংসী গণতান্ত্রিক বাঙলায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর সেই যে শুরু তা আর আমাদের জাতীয় জীবন থেকে নির্মূল হয়নি কোনোদিন।
'মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিশ কেন্দ্র আসক -এর গবেষণা ও হিসাব অনুযায়ী দেখা যায়--
বিএনপির আমলেঃ
২০০৪ সালে ২১০ জন,
২০০৫ সালে ৩৭৭ জন,
২০০৬ সালে ৩৬২ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এ সংখ্যা কিছুটা কমে আসলেও বন্ধ হয়নি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলেঃ
২০০৭ সালে ১৮০ জন,
২০০৮ সালে ১৭৫ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হন।
এরপর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। ওই বছর এই সংখ্যা বেড়ে হয় ২২৯জন।
অন্যদিকে পুলিশ সদর দফতর থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে জানা যায়ঃ
২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অপহরণের মামলা হয়েছে ৪ হাজার ৪৮১টি।
২০১০ সালে ৮৭০টি,
২০১১সালে ৭৯২টি,
২০১২ সালে ৮৫০টি ও
২০১৩ সালে ৮৭৯ টি
২০১৪ সালে ৯৮৭ টি,
২০১৫ সালে ১০৭২ টি
অপহরণের ঘটনা ঘটে।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে অপহরণের ঘটনা ঘটে ১৯৬টি।
জানুয়ারি মাসে ৬২টি,
ফেব্রুয়ারি মাসে ৫৫টি ও
মার্চ মাসে ৭৯টি। "
সাড়ে সাতশো কোটি মানুষের? পেট্রোল বোমা, যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে আগুন, সন্ত্রাস, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, মুক্তিপন, চোরাকারবারি, দুর্নীতি, লুটপাট, দখল ইত্যাদি । পরিশেষে বলতে হয়
হুমায়ুন আজাদের বিখ্যাত উক্তি “একজন রাজাকার সাড়া জীবনই রাজাকার, একজন মুক্তিযোদ্ধা সাড়া জীবন মুক্তিযোদ্ধা নন”
এমনি এক স্বাধীনতা আমার
এমনি এক সোনার দেশের কথা বলছি ।
সেই হুমায়ুন আজাদ থেকে শুরু হয়েছিল মৌলবাদ ,জঙ্গিদের উত্থান সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়ার পরও , তবুও কেন সমাজ ও রাষ্ট্রের চোখে পড়েনি তা । সাম্প্রতিক মুসলিম সহ খ্রীষ্টান যাজক, হিন্দু সাধু, বৌদ্ধ পুরহিত, শিক্ষক, পুলিশ হত্যা সহ ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ১০জন ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছে ।
পহেলা জুলাই ঢাকার গুলশানে ঘটে যাওয়া জঙ্গিদের বিভৎস হত্যাযজ্ঞের পর পুরো বাঙালীজাতির বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত নাহয়ে ,নিরাশভাবই প্রকাশ করে দেয় আমরা কাদের কথা ভাবছি ।আমরা কাদের নিয়ে ভাবছি ! আমরা মানুষ না কট্টর ধর্মান্ধপন্থী ?
নিজেই যখন খুঁড়ে খাই নিজেদের সতীত্ব
তখন আর কাকে দেব দোষ পরাধীনতার ?