আমি —
সমস্ত জীবের হৃদয়ে জ্বলা অদৃশ্য পরমাত্মা!
আদিত্যদের মাঝে আমি বিষ্ণু, সর্বকর্মফলের বিধানকারক!
ইন্দ্রের মধ্যে আমি মনসংহারী মহাকাল রুদ্র,
মাসের মধ্যে অগ্রাহায়ণ — মৃত্যু ছুঁয়ে যাই অনন্ত প্রাণ!

আমি —
অভিলাষীর নীতি, মুনির মাঝে ব্যাসদেব,
পুরোহিতদের মধ্যে আমি বৃহস্পতি — ধর্মের দিকপাল!
নাগদের মাঝে অনন্ত, দৈত্যের প্রহ্লাদ,
সৃষ্টির আদি, মধ্য, অন্ত — আমি অনন্ত চিরন্তন।

আমি —
অক্ষরের মধ্যে আকার, মহর্ষি ভৃগু,
বাক্যের মাঝে ওঁকার — সৃষ্টির চাবিকাঠি আমি।
নারীদের মাঝে কীর্তি, স্মৃতি, মেধা, ধৃতি, ক্ষমা,
জ্ঞানবানদের মধ্যে জ্ঞান, স্রষ্টাদের মাঝে ব্রহ্মা।

আমি —
অস্তিত্ব সমস্ত বস্তুর, সর্বগ্রাসী মৃত্যু,
পক্ষীর মধ্যে গরুড়, স্থাবর বস্তুদের মাঝে হিমালয়।
দেবর্ষিদের মাঝে নারদ, পান্ডবদের মধ্যে ধনাঞ্জয়,
ছন্দের মাঝে গায়ত্রী, বলবানদের মধ্যে বল আমি।

আমি —
জলাশয়ের মাঝে সাগর, সমস্ত বৃক্ষের মধ্যে অশ্বত্থ,
মৎসদের মাঝে মকর, নদীর মাঝে গঙ্গা, ঋতুর মধ্যে বসন্ত।
পর্বতের মাঝে সুমেরু, গাভীর মধ্যে কামধেনু,
শ্রেষ্ঠ হস্তীদের মধ্যে ঐরাবত — মহাশক্তি আমি।

আমি —
জ্যোতিষ্কদের মধ্যে কিরণশালী সূর্য,
দমনকারীদের মাঝে দণ্ড, কবিদের মধ্যে শুক্রাচার্য।
আমি সর্বত্র — অদৃশ্য, অনন্ত, অসীম,
আমি সেই শক্তি, যে বিশ্ব গাঁথে, চলমান করুণার ছোঁয়া।

আমি —
যুদ্ধের রণক্ষেত্রে ন্যায়ের রুদ্র, প্রেমের অগ্নিস্নান,
বুদ্ধিমানের জ্ঞান, মাস সমূহের মধ্যে অগ্রাহায়ণ।
আমি —
সকল প্রাণের অন্তঃস্থ, সত্য, ধ্রুব, সময়ের চক্র,
জাগ্রত আত্মার দীপ্তি, চিরন্তন মুক্তির আলো।

আমি —
যে পথ দেখায় অন্ধকারে, যে দিশা দেয় বিভ্রান্তির মাঝে,
আমি সেই গীতার বাণী, মহাশক্তির গান,
আমি সেই বিদ্রোহী চেতনা, যা ভেঙে দেয় দাসত্বের শিকল।

আমি —
অহংকার নয়, আমি ঔদার্য, আমি আত্মা, আমি ঈশ্বর,
আমি প্রেম, আমি করুণা, আমি বীরত্ব, আমি জয়!
আমি —
সব কিছুতে, সর্বত্র, চিরন্তন,
আমি সেই পরম শক্তি, যা তুমিই, আমি তুমিই!