এই যে আমার ফসলে ঢাকা ধূসর বালুর চর
এথাই ছিলো আমার বাড়ি ছোট্ট সুখের ঘর।


এখানে ছিলো আমার গ্রাম মায়া-মমতায় ঘেরা
পাশেই ছিলো বিশাল যমুনার, সতত প্রবাহ ধারা।


কত মানুষ কত ঘর ছিলো কত পাড়া
কত মন্দির কত মসজিদ ছিলো প্রেমে গড়া।


হাট-বাজার,  ইস্কুল-কলেজ ছিলো মাদ্রাসা;
সবুজে-শ্যামলে  বিরহ-মিলনে ছিলো ভালোবাসা।


ধন সম্পদ জায়গা জমি ছিলো প্রাচুর্য ঘরে
সাজানো স্বপ্নে সুখ বিছানো ছিলো জীবন জুরে।


এই খানে ছিলো বাস্তু-ভিটে স্বর্গের মতন-
হেসে-খেলে সবাই মিলে কাটাতাম জীবন।


ঐখানে ছিলো বাবার ঘর থাকতো বাবা-মায়ে
পাশেই ছিলো ফুলের বাগান কত শোভা নিয়ে।


উঠানে ছিলো দাদার কবর ঢাকা সবুজ ঘাসে
সে সব এখন শুধুই স্মৃতি, নয়ন জলে  ভাসে।


যমুনা নদী সর্বনাশী সব নিয়েছে কেড়ে-
সহায় সম্বল সব হারিয়ে বাঁচি কষ্ট করে।


স্রোতের খেলায় ভেঙ্গেছে সবি দেখেছি চেয়ে চেয়ে
আবার এথাই পরেছে চর নিদারুণ শূণ্যতা নিয়ে।।


এখন আমি অভাগা এক কষ্ট নিয়ে বুকে
দারিদ্র্যতার কষাঘাতে বাঁচি ধুকে ধুকে।।


বাঁধের ধারে ছাউনি তুলে থাকি পরিবার নিয়ে
অভাবে আকালে; জীবন কাটে অনেক ব্যাথা সয়ে।।


অর্থ কষ্টে অন্ন জোটেনা জীর্ণ বস্ত্র পরি
বৃষ্টি এলে ছাপড়া ঘরে, ছাতা মাথায় ধরি।।


বন্যা এলে চারি দিকে পানি থই থই করে
খোদারে ডাকি না উঠুক পানি আমার ছোট্ট ঘরে।


কাল বৈশাখী ঝড়ের সময় থাকি ভীষণ ভয়ে
ভাঙ্গলে ছাউনি আশ্রয় নিবো কোন-খানে গিয়ে!!


এমনতো ভাবিনি; কখনো কভু, এতটা অসোহায় হবো
সব পেয়েও সব হারিয়ে এত দুঃখ কষ্ট সইবো।।


হারানোর ব্যাথা কত ভারি হয়, যে হারিয়েছে সে জানে
বাস্তবতা নির্মম হলে সুখ-শান্তি থাকেনা জীবনে।।


তবুও মনে  আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে আমি রাখি
চরের বালিতে ফসলের হাসিতে নতুন স্বপ্ন দেখি।।