অবন্তীর গর্ভে আমার সন্তান,অবন্তীর শরীর খেয়ে বড় হয়
অবন্তীর এখন আহারে অতৃপ্তি
ঘনঘন অসুখ করে,জ্বরজারিতে অবন্তী কেমন শুকিয়ে যায়।
মাঝ রাত্তিরে ঘুম ভেঙে দেখি অবন্তীর চোখে জল;
বিছানায় খসে পড়া নিকটাকাশের তারা,
অবন্তীর আকাশ এখন এই ঘরের একটি ছোট্ট কামরা।
অন্ধকারে অবন্তীকে অচেনা মনে হয়
তলপেট স্ফীত হয়ে ওঠে,
একটি পৃথিবী এখন অবন্তীর শরীরে
পবিত্র দ্যুতি ছড়ায় স্তনযুগল-
অবন্তীর রাশভারী শরীর এখন রমণীয়।
অভিযোগে আমাদের বেড়ালটির চোখ জ্বলজ্বল করে;
অবন্তী এখন রাঁধতে পারে না,
আঁষটে গন্ধে অবন্তী আমার গাভাসিয়ে বমি করে।
নিরামিষে দিন রাত্তির সহচর আমাদের হুলোবেড়াল
আমাদের সঙ্গমের শয্যাতেও ছিলো ও-
আমাদের অভাবে অনাহারের পরম মিত্র।
অবন্তী সন্ধ্যায় বলেছিল,একটি বার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে
অবন্তীর কণ্ঠ কেমন অপরিচিত-
কেমন মৃত মানুষের চোখে আমাকে দেখছিল অবন্তী
আমি নিত্যকার মতো বলে বসলাম;দেখা যাক ভোর হোক।
অবন্তী জানে ভোর আসবে না,
অবন্তী জানে আমার স্যান্ডেল জোড়া সেলাই করতে করতে-
অপারগতা প্রকাশ করেছে গলির মাথার মুচিটি।
অবন্তী জানে আমার পকেটে কবিতা ছাড়া কিচ্ছু নেই;
সে আরো জানে,কবিতা কোনো ব্যাংকেই ভাঙে না।
অবন্তীর এখন কি আক্ষেপ হয়;
ভালোবেসে বিয়ে করেছিল এক অপদার্থকে?
অবন্তীর কি এখন বিশ্বাস হয়;
অভাবের জানলা গলে পালিয়ে গেছে প্রেম?
অবন্তীর শরীর ছুঁয়ে কেমন ক্লীব মনে হয় নিজেকে-
উষ্ণ চুম্বনের চুম্বক ক্ষয়ে কেমন মাটি হয়ে গেছে ঠোঁট,
ঘাড়ের উপর সহস্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলে সমস্ত রাত;
আমি উষ্ণতার জন্য জড়িয়ে ধরি নগ্ন একটি শরীর,
ছ্যাঁত করে ওঠে বুকের ভেতর!
এ কোন শীতল স্পর্শ-
আমরা কি তবে জলে চষেফেরা দুটি শীতল রক্তের সরীসৃপ;
সংসার আমাদের চতুষ্পদী গল্পের পা খসিয়ে নিয়ে গেছে!
তবুও কি সাবলীল সাঁতরে ফেরে অবন্তী,
হাসি মুখে অতিথি এলে আপ্যায়ণ করে ডাল ভাতে-
"ভালো আছি" বলতে একটুও আটকে না ওর।
পুরাতন শাড়িরজমিনে কবেকার নতুনত্ব ধরে রাখে অবন্তী?
অথচ সময়ের সুতো ফেঁসে গেছে অভাবের নখে বিঁধে,
যার সমস্তটুকুই প্রকাশ্য।