চাইনি এভাবে বিদীর্ণ হতে—
মরীচিকায় ডুবে মিথ্যার রোদে;
চাইনি শ্মশান-শান্তি নিতে
অন্তিম শ্বাসের আগুন জ্বেলে,
চেয়েছি বিদ্রোহী জলে ডুব দিতে—
সুনীল সমুদ্রের অন্তর্ঘাতী স্রোতে!
চাইনি বজ্রাহত বটের মতো
আকাশ-ছোঁয়া ডালপালা গুঁড়িয়ে দিতে;
চাইনি শুষ্ক নদীর মতন
তৃষ্ণার্ত বালিতে গলগল শব্দে মরতে—
চেয়েছি অগ্নিশিখা হয়ে জ্বলতে,
অন্ধকারের গায়ে দাগ কেটে যেতে!
চাইনি পাথর-চোখে দেখতে
অশ্রুহীন রাতের অপচয়;
চাইনি জীর্ণ কাগজের মতো
স্মৃতির হাওয়ায় খসখস শব্দে উড়তে—
চেয়েছি অমর কবিতা হতে,
রক্তমাখা কালিতে !
চাইনি ভাঙা ঘুড়ির নাচ
শূন্যের মস্তকে আকাশ-ছেঁড়া ডাকে;
চাইনি মিথ্যে চাঁদের আলোয়
প্রেতাত্মার মতো লেপ্টে থাকতে—
চেয়েছি স্ফুলিঙ্গ হয়ে ছুটতে,
অস্তিত্বের সব অস্পষ্টতা পোড়াতে!
চাইনি ঝরা পাতার গণিত
শূন্যতার খাতায় গণনা করে;
চাইনি মরুভূমির বুকে
অবিশ্বাসের ক্যাকটাস ফুটাতে—
চেয়েছি বন্যার রোষে ভেসে যেতে,
সভ্যতার সব কৃত্রিম বাঁধ ভাঙাতে!
চাইনি অর্ধেক মানুষ হতে,
খণ্ডিত চাঁদের আলো-আঁধারি মায়ায়;
চাইনি জলছবির মতো
অস্থির দর্পণে বিলীন হয়ে যেতে—
চেয়েছি পূর্ণিমার জ্বালা নিতে,
অন্ধকারকে নিজের ছায়া করে জয় করতে!