প্রিয় কবিবরেষু,
আপনাদের সূর্য্যকরকমলে নিত্যান্ত অবনত শিঃরে আমার চতুর্থ কাব্য "গৃহলাভ" প্রকাশের স্পর্ধা দেখাইলাম ৷ ভুলত্রুটি অবশ্যম্ভাবী ৷ আশা করি স্নেহ ও ক্ষমাসুলভ অক্ষি দ্বারা দেখিবেন ৷ আপনার মূল্যবান মন্তব্য কাব্যটিকে পরিশুদ্ধতা দান করিতে পারে ৷ আশা রাখিতেছি ভ্রমসকল নিবারণ করিতে আপনাদিগের সাহায্য পাহিব ৷ ভালো থাকিবেন ৷ শুভেচ্ছা সতত ৷
আপনাদিগের স্নেহলোভী
ইমতিয়াজ



                      " গৃহলাভ"


স্ব—শব্দে রুদ্ধ দুয়ার গেল খুলি'
তাকায়ে দেখ,
ওরে দেখ চোখ তুলী ৷
কে এলো আজ,
এমনও বাদল ও দিনে,
এমন ও ভরা সাঝেঁ!!
ভৃত্য খুলি দ্বার,
বিস্ময় চোখে ভার!
শুধালো," কে তুমি পান্থ?
দাড়ায়ে দুয়ারে ৷
কহিল পান্থ,"আমি?
আমি চির অশান্ত!
এসেছি শান্তি লভিবারে ৷
ক্ষীণ দীপালোকে কৃষ্ণ সে অবয়ব,
যেন বহিছে তথায় আজন্ম দুঃখ,পরাভব ৷
অন্দরে ডেকে নিয়ে দিল তারে আসন ৷
গৃহস্বামী করে আলাপন ৷
কে তুমি দেহ পরিচয়?
ক্ষীণ কন্ঠে সেজন, দ্যাহে বিবরন,
"আমি গৃহত্যাগী, সতত দূরহভোগী;
এসেছি তব দ্বারে,মুক্তি লভিবারে ৷
গৃহস্বামী," আমি কী করিতে পারি?
স্বীয় মুক্তি সাধন নিজেই করিতে নারি!!
পান্থ,—
তুমি ত গৃহদেব,
আমি বৈরাগী ৷
গৃহের স্বাদ আমারো আছিল,
হঠাৎ কী যে হলো! ত্যাগিলাম তারে ৷
আজ গৃহে ফিরিতে মন
সতত করে আনচান,
ফিরিতে না পারি ৷
গৃহস্বামী," কেন?
কেমনে ফিরিব, সংসার কার্যে
দিয়াছি ফাকি!
পুত্র,কন্যা, পতি না জানায়ে সবে
ত্যাগিয়াছি গৃহ,
আজ বার বছর হবে!!
তারা কী দিবে পরিচয়?
যদি ফিরে যায় ,
ত্রাসিত মন সেই আশংকায়!!
আমি হেরিয়াছি অনেক
আকাশ,পাতাল,অচল,অতল,
মুক্তি কোথায় মেলে?
বার বছর পরে সবই বৃথা গেলে,
দেখি করি চিন্তন
আমি পরাধীন!
মুক্তির আশে নিজ পরিবারে,
দিয়াছি কত যাতন!
কেন তারা মোরে করিবে গ্রহন?
গৃহস্বামীর অশ্রুসজল নেত্র দেখি পান্থ,
কহিল, করিয়াছি কী হেলা
হেন কালবেলা!!
যাহার কারনে তব লেচনে ব্যাথা নীর রাজে!!
গৃহস্বামী,—
ওরে নির্বোধ
    পাষন্ড, বর্বর
সংসারে যত সুখ সবই ত আত্মীয় সনে,
তুই কিনা রেখে তারে - ঘুরিস মুক্তির টানে!
যত মুক্তি সবই সেথা
    অরণ্যে মুক্তি কোথা বন্য পশুর সনে?
না জানি কতকাল হতে
    তব পুত্র,কন্যা
       রহিয়াছে দাড়ায়ে
            নিস্তব্দ পথে
তব সাক্ষাত লভিবারে ৷
না জানি কত ঝড়িয়াছে
তাদের নিস্পাপ অশ্রুজল!
কত কাল তারা পারেনি ডাকিতে
পিতারে, পিতা বলে!
কতশত অরিদল আঘাত করিয়াছে তারে,
হইতো নিভৃতে তবু স্মরিয়াছে তোরে ৷
কত অসহায় দুর্দিনে
কেটে গেছে পিতাহীনে;
তবুও সন্তানে
অধীর তব দর্শনে!!
হয়তো তব পত্নী
ব্যাথা রথের নিভৃত সাঁরথী,
স্ব-স্নেহে জড়ায়ে সন্তানে
আশ্বাস দিতেছে ক্ষনে ক্ষনে ৷
তাদের বক্ষ রোমন্থন,
বহিছে সর্বক্ষণ ৷
এতদ শুনিয়া পান্থ
মুক্তি সাধন করিয়া ক্ষান্ত
উঠিল বিদ্যুৎ বেগে ৷
গৃহস্বামী!কোথা যাস হেন স্বঘন তিমিরে?
পান্থ-
কন্যা, পুত্র দ্বারে ৷
বেশ ত যাবে ঝড় মিটিবার পরে ৷
নাহ, মুক্তি ডাকিয়াছে মোরে
রহিব কেমন করে!!
আর একটি মুহুর্ত্য
করিব না হেলা,
রুধিতে পারিবে না মোরে হেন কালবেলা ৷
স্ব-বেগে ধায় পান্থ
গৃহলাভ আশে,
দীর্ঘ বার বছরের সেই মুক্তি ধাম
সরে যায় পাশে ৷
সপ্তদিন পদব্রজে অবশেষে পান্থ
পৌহছিল গৃহপ্রান্তে ৷
সহসা চলন স্তব্দ
কম্পমান গাত্র হনু নিস্তব্দ!
গৃহান্দরে ঝ্বলিছে প্রদীপ খানি
জীবনের অন্তিম সম্বলখানি টানি!
যতক্ষীন স্বরে ডাকিল অতীথ নামে
প্রিয়ারে তাহার,
আশ্চার্য্য! সে কন্ঠ এত ক্ষীণ
নিসৃঃত পুর্বে হয়েছিল লীন ৷
সে স্বর শুনে প্রেয়সী তাহার
বাহিরিল গৃহ হতে
জীর্ণ বস্ত্র,শীর্ণ দেহ ক্ষান্ত বিরহেভার ৷
স্বহস্তে প্রদীপখানি রাখি ভূ-পরে
স্বীয় আচল খানি বিছায়ে দিল তারে ৷
প্রিয়ার চিবুকে পান্থ হস্ত বুলায়ে
সিক্ত করিল নয়ান ব্যাথা আখিঁ নীরে ৷
ধীর পদব্রজে পান্থ প্রবেশিল দ্বারে ৷
শুধালে তারে কোথা মোর
প্রান মানিকেরা?
প্রেয়সী তাহার তুলিল ক্রন্ধন উৎরোল,
নিমগ্ন করি ধ্যান পার্শ্ব সমাধীস্তুপ'পরে ৷
রোরূদ্ধবদনে পান্থ বসিল মাটি পরে
সহসা নিভিল দ্বীপ দুরন্ত আধাঁরে ৷৷