শুকতারা
আকাশ থেকে তোমাদের মাটিতে খসে পড়ার
অসংখ্য গল্প আমি পড়েছি-
তোমাদের হৃদয়ের দহন
আমার পদ্ম পুকুরের অগণিত লাল পাপড়িকে বহুবার কালো করেছে।
যে পাপড়িগুলোতে সুবর্ণাকে লেখা হুমায়ুনের চিঠির জলছাপ ছিল,
আমি ঘড়ি হাতে দিয়ে বহুবার সে লেখা পড়েছি।
রুমালে হাত মুছেছিলাম, যাতে লজ্জাবতীর অভিশাপ না আসে তোমাদের উপর।
শুকতারা
আমার খুব জানতে ইচ্ছা করছে,
খসে পড়ার পর তোমরা এখন কেমন আছো?
এখন নিশ্চয়ই তোমাদের অমাবস্যা পূর্ণিমা এক হয়ে গিয়েছে।
মেঘ ভেদ করে আলো দেওয়ার জন্য এখনো কি তোমাদের ঝগড়া হয়?
নাকি স্যান্ডো গেঞ্জির মতো শার্টের নিচেই বাধ্য হয়েই
নির্বাসন নিয়েছ?
আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছা করছে শুকতারা।
অমাবশ্যাতে কি এখনো তোমরা কাঁদো?
এখন কি সূর্যের আলোকে তোমরা ভাবো ওটা একটা জল্লাদের ছবি?
অসংখ্য শুকতারাকে যে চাঁদ দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে
সেই অদ্ভুত জাদুকরকে কি এখনো তোমরা রাজা মানো?
যার আলোয় সূর্যের মতোই নিমিষেই নিষ্ক্রিয় করে দেয় তোমাদের আলোকজ্যোতি, অধ্যবসায়, পরোপকার
এমনকি সমস্ত কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন।
তোমাদের আজন্মের আকাঙ্খাকে যে নিমিষেই থেতলে দেয় বুলেট জুতোই।
তাকে কি তোমরা এখনো মহারাজা মানো?
তোমার কি এখনো মনে পড়ে সেই বোষ্টুমির কথা যে শুক্ল দ্বাদশীর দিনে অন্তরাটুকু শোনাতে চেয়েছিল?
শুকতারা
তোমাদের কি কখনো মনে হয় মানুষের মতো তোমাদের নামকরণও বৃথা?
কখনো কি ইচ্ছা করে ধিক্কার দেই নিজের নামকরণের উপর?
কখনো কি ইচ্ছা করে রোহিঙ্গাদের মতো থু থু ছেটাই নিজের জন্মস্থানের উপর?
চিৎকার করে বলি আমি শুকতারা নই
আমি চির দুখী
বদলে দাও আমার নামকরণ
আজ থেকে সবাই আমাকে দুখতারা বলে ডাকবে।