চাওয়া পাওয়া


কোমল দাস


খুব দ্রুত বেড়ে ওঠার আজন্ম স্বপ্ন,
বুক ফাটা যন্ত্রনায় করেছি হাহাকার,
ঝুলেছি লোহার শিকে দড়ি বেঁধে,
আকাশ ছোবার স্বপ্নে ছিলাম বিভোর।


যখন বড় হতে চেয়েছিলাম -
আশা পূর্ণ হয়নি,
মনের চাপা কষ্টে নিরবে নিভৃতে কেঁদেছি।
তাইবলে বার্ধক্যও চাইনি।
চাইনি যন্ত্রনার অথই বিস্তার।


থাকতে চেয়েছিলাম যুবক হয়ে-
তুখোর যৌবন জোয়ারের মাঝে,
হিমালয়ের সুউচ্চ পাহাড়ের মত দাড়িয়ে
জল জল করে অনন্ত কাল ধরে জ্বলতে,
অথবা মধ্যানের সূর্যের মত প্রখর তেজে
মধ্য গগনে খা খা করে তেজকিয় আলো ছড়াতে।


যদিও ক্ষণস্থায়ী তার সময়
তবুও তার স্বপ্ন থাকে
দিন আবর্তনের সাথে পূনরায় ফিরে পায় যৌবন,
কিন্তু আজ আমার চাওয়া ভিন্ন
যৌবনের জ্বলন্ত বেলায় দাঁড়িয়ে
শিশু হতে চাই আমি!
আজ আর বড় হতে হতে আকাশ ছুতে চাই না আমি
লোহার শিকে দড়ি বেধে ঝুলি না
অবুজ শিশু হয়ে মাটিতে হামাগুড়ি দিতে চাই!


স্কুল বালকের বেশে
ঘাড়ে ব্যাগ ঝুলিয়ে চলি,
মনের মেলায় নাগর দোলায় চড়ি
হৃদয় কাননে শখের কানামাছি খেলি,
ঠিক যেনো ছোট অবুঝ বালক হয়ে
পুতুল খেলি হৃদয়ের পুতুল ঘরে,
দুঃসহ ব্যথায় মনে করিয়ে দেয়
পুরনো দিনের ফেলে আসা স্মৃতি.......


হারানো দিন আমায় মনে করিয়ে দেয়
এমনি করেই এসে যাবে বার্ধক্যের করুণ  পরিনতি
সেই আশঙ্কায় মিটে যাচ্ছে জীবনের স্বাদ
সমস্ত ভাবনা আজ মৃত্যুকে ঘিরে
ভাবতে ভাবতে বড্ড ক্লান্ত আজ।


মনের তানপুরাতে বাজে শুধুই বিরহের সুর
নির্বাক মন শুধুই শিশু হতে চাই!
অথচ আজ আর বড় হতে চাইনা
সেই শিশু বেলার মত।


বড় হতে হতে বড় হয়েছি অনেক
আর বড় হতে চাইনা
আমি শিশু হতে চাই আবার,
অথবা এখানেই থামতে চাই,
আমি বার্ধক্য চাই না।


জানি, চাওয়া পাওয়ার হবেনা কখনই মিলন।