আজ থেকে তিন দিন আগে -
জাকিয়া ফেরদৌসী নামের মেয়েটি বিয়ের স্ট্যাটাস দিয়েছিল,
স্টাটাসে ছিল ফটো, হাস্যউজ্জ্বল মুখ।
মেয়েটি স্ট্যাটাসে লিখেছিল মনের মতো একজন জীবনসঙ্গী পেয়েছি,
সে আমাকে সব স্বাধীনতা দিবে,
সারাজীবন ভালোবেসে আগলে রাখবে।


তার স্টাটাস পড়ে জেনেছি -
এটা ছিল ওদের দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে,
তবুও মেয়েটি বিশ্বাস করেছিল ছেলেটিকে।
করবেই না কেন?
সমাজের লোকদের কটুকথা,
পাড়ার বদমাইশ ছেলেদের খারাপ ইঙ্গিত,
পরিবারের লোকদের অবহেলা মেয়েটিকে বাধ্য করেছিল।


মেয়েটি এক বাচ্চাসহ দ্বিতীয় বিয়েটা করেছিল একটা নির্ভরযোগ্য আশ্রয়ের আশায়,
একটু বিশুদ্ধ ভালোবাসার আশায়,
কিন্তু মেয়েটির বিশ্বাসে ভুল ছিল,
মেয়েটি সমস্ত বিশ্বাস দিয়ে প্রতারক ছেলেটিকে ভালোবেসেছিল।


বিয়ের স্ট্যাটাস দেওয়ার তিন দিন পর,
ঠিক তিন দিন পর,
মেয়েটি আবার স্ট্যাটাস দিল -
তার মাথার উপর আকাশ ভাঙার;
বিশ্বাসের দেয়াল ভাঙার খবর নিয়ে মেয়েটি অশ্রু ভেজা চোখে লাইভে এলো,
কেঁদে কেঁদে জানালো তার হৃদয় ভাঙার উপখ্যান;
জানালো ছেলেটি ছিল বড্ড লোভী,
তার জমানো সমস্ত টাকা, গায়ের গয়না,
মেয়ের নূপুর নিয়ে ছেলেটি নিরুদ্দেশ -
আহ্ কি নিদারুন প্রত্যাখান!!


ঝড়ে বিশ্বাসের বৃক্ষ ভাঙার পর,
মৃতপ্রায় প্রাণে বিশ্বাসের যে কচি পাতা গজেছিল -
সেটাও এক লোভী ছাগল এসে খেয়ে গেল,
অথচ ছাগলটা ধৈর্য ধরলে সজীব এক বৃক্ষ পেত,
সারাজীবন পেত সতেজ আহার।


আসলে প্রতারক মানুষরা এমনই -
তারা খুব সহজেই বিশ্বাসী মানুষকে সুকৌশলে ঠকায়,
অল্পে বিশ্বাসী মানুষগুলো জাকিয়া ফেরদৌসীর মতো বারবার ঠকে,
তাদের ঠকে যাওয়ার গল্প কেউ ইতিহাসের পাতায় লিখে রাখে না,
তাদের হারিয়ে যাওয়ার মতোই -
তাদের ঠকে যাওয়ার ইতিহাসও হারিয়ে যায় কালে গর্ভে।


মেয়েটি লাইভে আসার পর,
এক ডজন ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার স্টাটাস দিল,
তারপর-- তারপর মেয়েটিকে আর অনলাইনে পাওয়া যায়নি,
পাওয়া যায়নি ফোনের ওপাশেও।
হয়তো মেয়েটি জীবনযুদ্ধে আবার ঘুরে দাড়াবে,
নয়তো চিরকালের মতো হারিয়ে যাবে কালের গর্ভে।


আমি প্রার্থনা করি -
জাকিয়া ফেরদৌসীর মতো মেয়েরা ঘুরে দাঁড়াক,
লড়াকুর মতো জিতুক জীবন যুদ্ধে,
তারা প্রতারক পুরুষ জাতিকে দেখাক বৃদ্ধা আঙ্গুল।
তাদের এভাবে হারতে দেখা,
ধুঁকে ধুঁকে মরতে দেখা,
অন্তত কাম্য নয়।


উৎসর্গ: জাকিয়া ফেরদৌসী