গোধুলী বেলার ঝরা পল্লবী বিমুখ নয়নে চাহে,
অন্তরে তার ছেঁড়া মমতার বিমূর্ত বাণী বাহে।


চির ধরা বাকলে রুগ্ন শরীর পাতা নাই কোন ডালে,
স্বপ্ন শাখার সবুজ শোভা বুঝি ভরে নাই কত কালে।
ঝরে গেছে সুখ শুকনো পাতারা বৃত্তেরে মায়া ছাড়ি,
ভরা ফাল্গুনের নিঃশ্বাস বুজি বাহিছে বেদনাই তারি।


অসীম সমুদ্র ভূবন স্বপ্নের ঢেউ ছোটে পবনের-এ বরে,
চপলা ষোড়শী মুক্ত হরিনী মোহে লুক-চুরি খেলা করে।


স্বপ্নেরে ভাঙ্গা হাহাকার বুকে এনে দেয় বিষাদ মালা,
করুন সুরে বেঁজে উঠে সানাই আসে বিদায়ের পালা।
উদাসীনী তাহার হুতাস হৃদের বেদনা ছড়ায়ে সারা,
দু’চোখ মতন মেঘের জলে ঝরে যায় শ্রাবন-ধারা।


সূর্য্য বা যদিও অস্ত যাবে, ধরনীটা রবে ভরে আঁধারে,
ফিরবে না এই শুভক্ষণ, এই রাত আর আসবেনারে।


উড়ায়ে পালে স্রোতের ডানে হাল ধরে কোন-মতে,
জীবণের ত্বরে ভাসায়ে তরী ভেসে যাই ভাটির পথে।
পোড়া মন, খেয়ালী বাতাসে ছিড়ে যায় পালের দড়ি,
অকুল পাথারে নোঙ্গর ফেলি ঢেউয়ে করি গড়া-গড়ি।


ছেরা পালকে পতঙ্গের আর্তনাদ, পিপড়ার গলাবাজী,
উদাস ক্ষণে নিঠুর নিয়তি চেরা বাকলে হাসে স্বপ্নরাজি।


দিন বদলের ফাগুন যখন বয়ে চলে বসন্ত আবাহন,
নিরাশ ফাঁপরে নির্ঝরিণী রসে জীবনের আস্ফালন।
বর্ণিনী চাহিছে বিনয় নয়নে পৌরষ উঠিছে দুলে,
বিষাদ আসিয়া বিবাদ বাঁধিছে, বসিছে পসার খুলে।


নিশি-দিন জ্বলা সংসার জ্বালায় ধুকে ধুকে পুরে মরে,
বিশ্ব জয়ের আসর মাতিয়া আসে না যে সুখ ঘরে।


সংসার ভূবনে অঙ্কিত চিত্রাঙ্কনে পড়ে মনে পূবালীর সুখ
শাড়ীর আঁচলে নয়ন ঢাকিয়া কেঁদে কেঁদে ভাসাইছে বুক।
ফিরে আর আসে না বালু চরে ফেলে আসা ছেলে বেলা,
তবে পুতুলের বিয়ে ভাঙ্গা ছলে কবেই ভেঙ্গে যেত খেলা।


স্নেহ হারা মনে মায়ের আঁচল ধরে পড়ে যেত টানা-টানি,
নিরব নয়নে চাহিত সে মুখপানে বলিত না কথা অভিমানী।


রক্ত বদনে কাঁদ কাঁদ চোখে ফেপে ফেপে উঠিত যে ফুসে,
তুলিত না মুখে অন্ন কোন কেঁপে কেঁপে পুষি মন দোষে।
ঔষসে মনে পড়ে চন্দ্রাননে চিনচিন করে উঠে মায়াময় বুক,
কতদিন দেখি-নি তো চপলার হাসি ভরা সেই চঞ্চলা মুখ।