আজ সুনসান রজনীতে আরও একটি কবিতার জন্ম হবে, প্রসবের যাতনায় কবি অবচেতন! সেই সায়ংসন্ধ্যা হতে গগনে সঞ্চিত নীরদ, অপেক্ষমান কাল বৈশাখীর ঝড়! বিকৃত মদের দুর্গন্ধে যবরদস্ত মদ্যপের মতো ঘোলাটে চোখ।


জরায়ু ছিঁড়ে গড়িয়ে পড়ে সদ্য প্রসূতের কবিতা!
মুমূর্ষু কবি অভিভূত হয়ে সহসাই থমকে দাঁড়ায়!
দিস্তে দিস্তে কাগজ আর ডজনখানেক কলমে লিখে যাওয়া শেষ পাতা আর শেষবিন্দু কালির একি গর্জন!!


কবিতা হয়ে ওঠে জীবন্ত! অসংখ্য নালিশ নিয়ে সম্মুখীন হয় মানবাত্মার মতো! দৃঢ়কণ্ঠে বলে আমি স্বাধীনতা চাই, সার্বভৌমত্বের মর্ত্যভেদে আমি স্বাধীন ভূখণ্ড দর্শন করতে চাই! শতবর্ষ ধরে কাব্য-পুঁথি আর অসংখ্য দলিলের তলায় ক্লিষ্ট হয়ে চাপা পড়েছিলাম!


আজ রাজমার্গে নিশান উড়িয়ে চিৎকার করে বলতে এসেছি আমি আমার অধিকার চাই! আমি সোঁদা কৃষ্ট মৃত্তিকায় দখিনা বাতাসে দোলায়িত শাল-পিয়ালের নব পল্লব, অজপাড়াগাঁয়ের মেঠো পথ কিংবা নব দিগন্তে চলমান মাঝির পাল।


আমি প্রভাতের শুভ্র নীহার আর ভাসমান নীরদে ঢাকা  শ্যামবর্ণের অরণ্যের বুক, সোনাফলা কৃষাণের লাঙ্গলের ঈশ, ফিরিয়ে দাও আমার স্বাধীনতা! আর চাই না- বেয়নেটে ক্ষতবিক্ষত আমার শ্যামবর্ণের অবনী!


আমি মানবো না মমতার বুকে পাশবিক নির্যাতন আর নগ্ন কাব্য বাণে বলাৎকৃত মাতৃত্বে পুনরূদ্ধারের পোস্টমর্টেম। দেখতে চাই না- ক্ষুধার রাজ্যে বিলাসী রেস্তোরাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অনাথের দুইহাত। মেডিক্যালের ফ্লোরে পরে থাকা বিনা ট্রিটমেন্টের মৃতদেহ!


পাগলীর জঠরে হিংস্র দানবের পাপাসিক্ত সেই রক্তপিণ্ড থেকে আজ কবিতা হয়ে এসেছি! এবার স্বাধীনতা চাই! পুরোপুরি রাজ্যের স্বাধীনতা।


হে কবি! না-হয় বন্ধ করো তোমার কল্প আবেগের পাণ্ডুলিপি আর কবিত্ব!আমাকে নির্বাসন দাও! অবিরাম চলুক ষোড়শী বেশ্যার খোলা স্তনে পাষণ্ড পিচাশের আঁচড়। বিন্দু বিন্দু রক্ত গড়িয়ে পড়ুক কবিতার পাতায়। তিপ্পান্ন বছর পূর্বের স্বাধীনতা থাকুক অনাদিকাল।