কবির সমুদয় কবিতা'রা আজ বড্ড বেওয়ারিশ, রোজ গুমরে কাঁদে তার অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপির পাতায়,
বেদনার্ত রোধিরে ঢেকে দেয় তার প্রতিটি পঙতি গুলো।
আর সর্বদা অশ্রুসিক্ত কবিতার প্রতিটি শিরোনাম,
রেণু-মাটির আস্তরণে আক্রান্ত হয় কবিতার প্রত্যেকটি শব্দমালা, ছন্দ গুলো ভীষণ যন্ত্রণার প্রবাহে বিদ্যমান।

একসময় কবিতারা প্রবল প্রাঞ্জল ছিলো, ছিলো কবির ছান্দসিক ভাবার্থের বাক্য বিন্যাসে মোড়ানো, রামধনুর মতো তার স্বপ্ন ছিলো এক আকাশ, পাণ্ডুলিপি থেকে উড়ে যেতো দিগন্ত থেকে দিগন্তে- মহাকাশ ছেড়ে মহাকালের শেষ কিনারায়।

আজ অর্থসূচক বর্ণ'রা কান্না রোলে রোজ, কেঁদে চলে অবিরাম নিরবে নিভৃতে, পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠায় রয়ে গেলো জীর্ণশীর্ণ পরিচহীন পাণ্ডুলিপি, অজ্ঞাত রয়ে যায় ক্ষুরধার লেখনীর কবির এক একটি জীবন্ত কবিতা।

ঘুণপোকাদের কবল থেকে কবে পাবে মুক্তি!
কখন উড়বে প্রতিটি কবিতা নব কাগজের পৃষ্ঠাজুড়ে?
কবে তাদের ছড়িয়ে দেওয়া হবে প্রজন্ম হতে প্রজন্মে?
কবে হবে দলবদ্ধে নতুন এক-একটি নামে পরিচয়?

অবগতহীন আজ কবিতা গুলো, বাক স্বাধীনতার স্বাদ তার জিবের ডগায়, আজ হয়তো এখানেই প্রেমকাব্যের সমাপ্তি! অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপিরা পড়ে থাকবে বুক সেলফের ভাজে,

জানি! কবির জীবদ্দশায় আর কখনো মেলে ধরা হবেনা তার কবিতার ডায়েরিটা! ধুলোয় ভরা পরিত্যাক্ত চার দেয়ালের কোণায় পরে রবে নিখোঁজের মত বেনামীয় পাণ্ডুলিপি।

আড়শোলা আর ইঁদুরের বিষাক্ত কামড়ে প্রতিনিয়ত একটু একটু করে নিঃশেষ হয়ে যাবে কবিতার প্রতিটি পৃষ্ঠা, আর এভাবেই হয়তো একদিন হারিয়ে যাবে অন্ধকারে প্রতিবাদী কবিতারা।

তবে যাক দৃষ্টি প্রদীপে নিভে চন্দ্র-জোৎস্নার প্রেমাবাদ,
যুগলবন্দী কাগজ-কলম হয়ে যাক চিরতরে ফেরারী,
থেমে যাক নব প্রেমিকের না বলা কথা গুলো,
মুছে যাক রাজপথ থেকে প্রতিবাদী কবিতার মিছিল।

ওরা কাঁদুক অশ্রুসিক্ত নয়নে অহর্নিশ, ওখানেই জন্ম হোক বিধুর বেদনা, জ্বলেপুড়ে অঙ্গার হোক তার প্রতিটি শব্দমালা'রা, ভালো থেকো কবির কবিতা, ভালো থেকো হে অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপি।