এই-তো-বর্ষা
             ক্রমিক-নংঃ ২৫২
    ____ শাহাদাত সোহেল নীল.(কাকতাড়ুয়া)


মন খারাপের দিনে বৃষ্টিভেজা আকাশ  
কর্দমেশ্বর জলরাশিতে টই-টম্বর চারপাশ
সদাজাগ্রত শাখা হতে প্র-শাখা
বৈশাখ জ্যোষ্ঠে বিরূপ আবহাওয়া।
হঠাৎ করেই কালবৈশাখীর আনাগোনা
মেঘলা আকাশে গর্জনের দুরন্তপনা
ঝর ঝর অঝর ধারায় রূপসী বাংলায়
বর্ষার আগমনী বার্তায় পানকৌড়ি গান শোনায়।।


জ্যৈষ্ঠতে পড়ে প্রচণ্ড গরম। তারপরে শুরু হয়
আম জাম কাঁঠাল পাকার মরশুম।
জ্যৈষ্ঠের দমফাটা গরমটা যেমন অস্বস্তিকর
তার বিপরীতে আছে বাহারী ফলের মনভুলানো সমাহার।
জ্যৈষ্ঠের মধুমাস পেরিয়ে, গাছে গাছে ফুটে কদম ফুল
জানিয়ে দেয় আষাঢ় আসছে। বসন্তের অবসান হচ্ছে শ্রাবণ,
শুরু হয় বর্ষাঋতুর আগমন।।


গ্রীষ্মের দাবানল শেষে শ্যামলীল বর্ষায়
প্রকৃতি মনোরম সাঁজে আগমনী বার্তায়।
কখনো কখনো ঝরেনা এক ফোটা জল
পড়তে থাকে গরম অবিরাম
সবাই মিলে করি মোনাজাত
হে-আল্লাহ্ বাঁচাও মোদের, এমোদের পরিহাদ।।


কোন এক প্রাচীন যুগে পাড়ায় পাড়ায় হতো
ব্যঙের বিয়ের আয়োজন। তাদের বিশ্বাস ছিল এমন
এর ফলে ঘটবে বৃষ্টির আগমন। দূরের ঐ কচুরি কুও'তে
ডাহুক তার নৃঃশীত কন্ঠে জানায়,বর্ষার আগমনী বার্তা।।


বর্ষার কোমলতা গ্রীষ্মের নিমর্মতা, এ নিয়ে তৈরী হয়
নতুন এক নকশি-কাঁথার কাব্য কথা।
বর্ষার আকাশে ভেঁসে যায় সাদা-কালো মেঘ
কখনো বৃষ্টি কখনো হাড় ফাটানো রোদ।
বর্ষা মানে এই রোদ এই বৃষ্টি
মাঝে মাঝে উঁকি দেয় সূর্য্যি মামাটি।
সন্ধ্যা হতে চাঁদমামার শীতল আলোয়
আলোকিত করে আমার মায়ের সেই ছোট্ট কুঁড়েঘরটি।।


গুরু গুরু মেঘের ডাকে ধান ক্ষেতে বিচরন করে
কৈ শিং মাগুরমাছ অারও কতো ছোট বড় আকৃতি  
গৃহস্থরা ছুটাছুটি করে মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে
কেউই জাল, কেউবা খুচন-কোচ কিনবা বড়শী নিয়ে।
এযেন বর্ষা ঋতুর এক অফুরন্তলীলা বৈচিত্র।
ব্যাঙেরা দলবেঁধে ডাকতে থাকে
মেঘ হ মেঘ হ, শুরু হয় নবজীবনের আনন্দমেলা।।


হুলুদ-সাদা কদমী বর্ষার প্রতীক
কদম ছাড়া বর্ষার রূপ বর্ণনা করা অসম্ভব
বাতাসে ভেসে আসে কদমের গন্ধ।
হলুদ সাদা মিশ্রিত কদম ফুলের হাসি
ছোট ছোট ছেলেমেয়েদেরকে আকৃষ্ট করে।
এতো কিছুর পরেও বলব আমি,বর্ষা তোমায় ভালবাসি।।
  


রচনাকালঃ ১৬-০৬--২০১৭ইং
মিরিকপুর, লক্ষ্মীপুর।


[যেকোন ভুল-ত্রুটি মতামত অবশ্যই জানাবেন
এবং ভাল লাগলে শেয়ার করবেন]