জোসনা ছাওয়া শরৎ রাতে  ঘুম আসেনা মোটে।
টুসী-মনির ভাবনা শুধু- এদিক ওদিক ছোটে!


ভাবনারা যেই পা বাড়ালো জ্বীন-পরীদের দেশে-
ঠিক তখনই ঘরের ভিতর উঠলো কেরে হেসে!
হাসি তো নয়, রিনিঝিনি- বাজলো বীনার সুর,
সঙ্গে পায়ের নুপূর বাজে -সেও কী... মধুর!


তাহার পানে তাকিয়ে টুসী অবাক হলো খুব,
স্নিগ্ধ আলোয় ঘর উজ্বালা এমন যে তার রূপ!
গলায় তাজা ফুলের মালা কানে ফুলের দুল!
মেঘের উপর মেঘের সিঁড়ি এমন মাথার চুল!
চোখ দুটো তার পদ্মদীঘি কাজল আছে টানা,
গঠন-গড়ন  মেয়ে মানুষ, কিন্তু আছে ডানা!


বললো টুসী (তাহার পানে  অবাক চোখে চেয়ে)
: কে গো তুমি রূপের রানী এমন মিষ্টি মেয়ে?


বললো মেয়ে-হেসে হেসে : ফুলকলিদের গালে-
চুম দিয়ে ঘুম ভাঙাই আমি নাচের তালে তালে!
দিনে থাকি চাঁদের দেশে, রাত্রি হলেই আসি-
ফুলপরীদের রানী আমি ফুলকে ভালোবাসি!
আকাশ দিয়ে যাচ্ছি উড়ে তোমার দেখা পেয়ে,
নেমে এলাম তোমার কাছে ওগো সোনার মেয়ে!


বললো টুসী : পরীর রানী জানো আমি রোজই
একলা ঘরে শুয়ে শুয়ে তোমায় কেবল খুজি!
শুধায় পরী : ফুলের বনে যাবে নাকি টুসী?
তোমায় পেলে ফুল-পাখিরা সবাই হবে খুশী!


বললো টুসী : নামটি আমার জানো কেমন করে
বললো পরী : যারা আছেন এই পৃথিবীর পরে
জীব-যন্তু দৈত্য-দানো, গাছ-গাছালি নানা
এক এক করেই তাদের সবার নামটি আমার জানা!


বিস্ময়ে চোখ বড় করে বললো টুসী : তাই?
“হ্যা গো সোনা” বললো পরী-“এখন চলো যাই,
তা না হলে সূর্য মামা একটু সময় পরে
পূব গগনে উঠবে হেসে ভীষণ আলো করে!”


বললো টুসী : পরীর রানী একটু এবার ভাবো?
কেমন করে তোমার সাথে উড়ে আমি যাবো?
আমার তো নেই তোমার মতন রঙ-বেরঙে আঁকা
পিঠের উপর নকশা করা ওমন দুটি পাখা!


মুচকি হেসে বললো পরী : ছোট্ট খুকি শোন-
আমার পিঠে চড়েই যাবে নেই ভাবনার কোন!
টুসী তখন মিষ্টি হেসে বললো : যদি তাই
বিলম্ব আর করবো নাকো চলো চলো যাই!


                     (চলবে)