কুয়াশা ভেজা শীতের সকালে
মহাজন তখনো সুখের নিদ্রায় লুটে
আদুল গায়ে লাঙল কাঁধে কৃষক কিন্তু
মাঠের পানে যায় ছুটে।


ধনুর জল কাতো যে শীতল
শিহরণে তার কাঁপন জাগে গায়;
তোমরা কি জানো - তবুও কৃষক
কুয়াশা দলে কীভাবে যে মাঠে যায়?


কত কষ্ট বোনে সে ফসল ধরণীর এই  বুকে
ফলবে ফসল মিটবে ক্ষুধা স্বপ্ন আঁকে চোখে।
কঙ্কাল দেহে পুষ্টির অভাব অনাহার বার বার;
ফসল পুষ্ট করতে কৃষক জমিতে বিলায় সার।


রৌদ্র দাহে দগ্ধ শরীর বৃষ্টিতে অহরহ ভিজে,
ক্ষুধায় জ্বলে পেট তবু ফসলের ভালো খুঁজে।
অজানা অসুখে ভুগছে কৃষক নেয় না প্রতিষেধক,
তবু শস্যের পোকা করতে দূর  বিলায় কীটনাশক।


ফসল যখন পুষ্ট হতে চলে প্রকৃতি দেয় নাড়া
গভীর চিন্তায় বিনিদ্র রজনী কৃষক নিদহারা।
ভোর না হতেই ফসলের টানে ছুটে যায় মাঠে;
দেখে সে ফসল অকাল বানে ডুবছে তলাটে।


মাথার 'পরে হাত রেখে সে মাটিতে যায় বসে
অশ্রুফোটা ঝর্নার মতো বানের জলেতে মিশে,
'শ্মশানের ঐ জ্বলন্ত কাঠ দাও চেপে মোর বুকে'
ডুকরে লুটায়; মাটি ভাগ হ' আমি যাই তাতে ঢুকে।


সকরুণ হায় কৃষকের মুখ এ কেমন ধ্বংস লীলা!
চেয়ে আছে মহাজন, মুখে নিয়ে লালসার লালা।
অনাদায়ী ঋণের দায়ে কৃষক ভিটে বাড়ি দেয় বেচে;
সমাজে সে ভিখেরি দশায় কায়-ক্লেশে থাকে বেঁচে।