তন্দ্রা
সুদীপ সিনহা
আমি তখন দ্বাদশ শ্রেণী পার
আমি তখন ছটপটে যৌবন।
আমি তখন গল্প কবিতার
আমি তখন একলা মন কেমন।
অবসরে অবসরে মনের কোনে উঁকি
কে যেন সে ,কোথায় তাহার বাসা।
পলক মেলে তাকিয়ে যখন দেখি
বুকের মধ্যে ,স্বপ্নলোকের ভাষা।
স্বপ্ন দেখি স্বপ্ন আঁকি ,রাজকন্যার
কোথায় আছে সেজন।
বুকের ভেতর কান্না ঘনায়
সঙ্গে কুহু কুজন।
হটাৎ এলো ছুটির খবর
দূর পাহাড়ের দেশে।
সঙ্গী আছে জবর জবর
বলব তখন শেষে।
যাত্রা শুরু সন্ধে বেলা
গুজারপুরের মোড়ে।
এখন গরম জানলা খোলা
ও কার ওড়না ওড়ে।
নীলাম্বরী ও কে আসে
লজ্জায় মুখ লালি।
তাকাবে কি,এরই আশে
বুকের ভেতর খালি।
বুক ঢিপ ঢিপ,বুক ঢিপ ঢিপ
এগিয়ে আসছে যত।
বলতে কথা খাচ্ছি যে স্লিপ
ভ্যাবাচ্যাকার মতো।
ও ছিলো ভাইয়ের সাথে
মা বাবাও ছিলো।
কুন্তলিকা কৃষ্ণ মাথে
আমায় স্বপ্ন দিলো।
তন্দ্রা চোখে তন্দ্রা মুখে
তন্দ্রা চোখের তারায়।
তন্দ্রা দুখে তন্দ্রা সুখে
তন্দ্রা অশ্রুধারায়।
দুটি চোখের এতো মানে
দুজন খুঁজেই চলি।
কি অর্থ তার কে তা জানে
কারেই বা আর বলি।
চোখের ভাষা,মুখের হাসি
কেড়ে নিলো আমায়।
চোখেই বলি ভালোবাসি
কে আর আমায় থামায়।
কে আর বোঝে দুটি প্রাণের
স্বপ্ন দেখার আলো।
কে আর খোঁজে জাগরণের
তন্দ্রা বাসে ভালো।
ভালো লাগা ভালোবাসা
ভ্রমন সাথী করে।
বুকের ভেতর গভীর আশা
স্বপ্ন থরে থরে।
রাজগিরেতে, বুদ্ধ গয়ায়,
ত্রিকূট পাহাড়,গাছের কোলে।
জনারণ্যে,স্বপ্ন মায়ায়
হাতটি হাতে,প্রেমের দোলে।
দেখছে কি লোক,দেখুক আজি,
বুকে রাখি স্বপ্ন সাজি।
এত মায়া ,তন্দ্রা রাজি
প্রেমের বিতান সুরযে ভাঁজি।
দেখতে দেখতে সময় হলো
যাত্রা এলো শেষের দিনে।
ভুলতে হবে স্বপ্নগুলো!
আছে কি জোর প্রেমের ঋণে।
যাবার সময় তাকিয়ে ছিলো
আমার দিকে অপলকে।
আমার বুকে মোচড় দিলো
ভীষণ শোকে।
হারিয়ে ফেলা এ প্রেম আমার
জুড়বে কি আর?
কান্না আছে আর কিছু নেই
তোমায় দেবার।
তার পরে সেই হারিয়ে গেলে
কুড়িয়ে পাওয়া রত্ন যেন।
চোখের মায়া মিটিয়ে দিলে
বুকের তবু কান্না কেন।
আজও তন্দ্রা স্বপ্ন আঁকে
আমার চোখে,আমার বুকে।
আজও তন্দ্রা ,কাজের ফাঁকে
গোপন প্রেমে,স্বপ্ন সুখে।
রাধামনী 14/12/17/////