আমার রক্ত দিয়ে তুমি একটি সাম্রাজ্য গড়তে চাও!
আমার দেহের ক্ষুধার্ত জীর্ণ শীর্ণ হাড় দিয়ে
তুমি নির্মাণ করতে চাও - তোমার সুরক্ষা প্রাচীর ;
কিন্তু আমার ভিতরে শত-শত বছর ধরে
টেনে আনা ব্যাথার পুঞ্জীভূত স্তুপ থেকে বেজে উঠে
মাতৃভাষায় একটি গান।


আমি মাতৃভাষার গান শুনেই বেঁচে আছি, -
এমনকি জমি ছাড়াই!
এমনকি খাদ্য ছাড়াই!
এমনকি সবচেয়ে বেশী কষ্টের মধ্যে-ও!


এবং আমি এখন সেই গান গাই
অন্ধকার অরণ্যের ভিতর, অস্থির পর্বত চূড়ায়
অশান্ত সমুদ্র সৈকতে,-
প্রখর রৌদ্রে, প্রবল শীতে,অবিরল বৃষ্টিতে
সকালের সূক্ষ্ম কুয়াশায়, ধূসর সন্ধ্যায় এবং  
নিবিড় নিশায়
ক্রোধে ও ভালোবাসায়
দ্রোহে ও বেদনায়
বিরামহীনভাবে আমি সেই গান গাই।


এটা পৃথিবীর একটি প্রাচীনতম গান
এটা অধিকার আদায়ের গান
এটা স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার গান
এটা প্রতিশোধ নেওয়ার গান
এটা প্রতিরোধ করার গান
এটা নতুন একটি যুদ্ধের গান
এবং আমি এই গান গাইতেই থাকবো।


এমনকি যদি তুমি আমাকে জ্যান্ত পুঁতে দাও
এমনকি যদি তুমি আমাকে নিখোঁজ  হতে বাধ্য করো
এমনকি তোমার সৈন্যদের দ্বারা যদি আমাকে বিকৃত টর্চার করো
এমনকি যদি তারা আমার জিহ্বা এবং আমার চোখ উপড়ে ফেলে
এমনকি যদি আমাকে কারারুদ্ধ করো
এমনকি যদি তুমি আমাকে অ্যাসিডে দ্রবীভূত করো।
তবুও আমি এই গান গাইবো।


হে জন্মভূমি,-
তুমি একটি জাতিকে ধরে রেখেছো-
তোমার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অন্ধকার গহ্বরে
এখানে রাজরাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় আসে -
তাদের সোনার দাঁত দিয়ে আমাদের কামড়ানোর জন্য!


আজ রাষ্ট্রের হাতে মৃত পুরুষ এবং মৃত নারী
নিজেদের উত্থাপন করেছে,-
আমার ঠোঁট এবং আমার চামড়ার মধ্যমে তোমাকে  অভিশাপ দিতে;
আমি তোমার আইনকে অভিশাপ দিই!
আমি তোমার পতাকাকে অভিশাপ দিই!
আমি তোমার মুখকে অভিশাপ দিই!