আমি অশুভ মঘার অমাবস্যায় ঘুরঘুট্টি নিশায়,
দুর্বোধ্য ধূসর কুণ্ডলীতে ভূলুণ্ঠিত এই ধরায়।
বিধাতার সু-নিপুণ হস্তে আঁকা তিমিরপুঞ্জ কৃষ্ণাভ টিকা -
মেঘাবৃত আকাশের মতো ঢেকেছে আমার কপালের সুখ রেখা।
বিধিলিপিতে সুবিন্যস্ত লেখ্য এই ধূসরিমা জীবনের মুসাবিদা -
আঁধার আমার নিত্য সাথি, তাই দিশিদিশি গ্রাসে সদা।


আমি আজন্ম ভাগ্যহতো অসহায় !
মধুময় শৈশব পড়েছে চাপা দারিদ্রের গিরি-চূড়ায়।
কৈশোরী হাসিতে বিকাশিত কূট-কমল-কাঁটা,
এনেছে কূটা-নীল স্রোত, কৈশোরী আনন্দে ভাটা।
সেই অমাঘন কণ্টকার্কীণ পথ বেয়ে উত্তরণ,
আমার যৌবনে পদার্পণ!
আমাতে এলো বসন্ত, এলো রঙ-রূপ-গন্ধ-রস;
এলো তেজ এলো মত্ততা আনন্দ-বাসনা-মানস।
হৃদোদ্ভাবিত হলো আজ হতে বুঝি শুভদিন!
সকল আঁধার-গ্লানি পুঁছে রাঙিবো নব যৌবনের নবীন উষায়,
আমি আনন্দ বিহ্বল বিস্মৃত পুরোনো অধ্যায়!
কিন্তু নির্মম ভাগ্য আমার!
যৌবনের পিছু পিছু হেঁটে এসেছে আঁধার পুনঃবার।
আমি এই অশুভ চক্রের ঘুর্ণন পরিধিতে বন্ধি -
সদা সুখের সঙ্গে মহাদ্বন্দ্ব, দুঃখের সাথে সন্ধি।
এ যে বিধাতার দান!
বন্ধু,বলেনি গো মিথ্যা কোনো যেমন সত্য সূর্য-পূষন,
মাথায় আমার দূর্গতির এ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ শিরোভূষণ।

যৌবন দিশাহীন!
একদিকে আঁধারে বেষ্টিত যৌবনে আলো-অন্বেষায়,
দিকে দিকে খুঁজে ফিরে আলো কোথায়? আলো কোথায়?
সুরহারা পাখি আর গান ভুলা বাউলের মতন!
নয় কোনো জোছনা বিছানো চাঁদের দেশে বিচরণ -
এই সমাজের তীক্ষ্ণ কাঁচ-চূর্ণ পথের আঘাতে আঘাতে
রক্তাক্ত! ক্ষত-বিক্ষত যৌবন আজ ক্লান্ত চলতে চলতে,
আর অন্যদিকে পিপাসু পাখিসম পিপাসায় কাতর।
আঁধার-নিরেট যৌবনের উদ্রেক কামনার কামড়!
বন্ধু,বড্ড বিষজ্বালায় গো জ্বলে মোর তনু-মন-হিয়া,
সর্বাঙ্গে অনন্ত-নাগের অশেষ উগ্র বিষ-মন্থন ক্রিয়া।



বিঃদ্রঃ (কবিতার চিত্রকল্পটি আমার নিজের এটা যখন লিখছিলাম তখন কবিকল্পে এমন কিছু দৃশ্য ফিরে দেখা হচ্ছে যা আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেই দিনের সেই ক্ষনের স্মৃতির ভেলায় অনন্ত বেদনা-বিষাদ স্রোতে। এর নিমিত্তে কবিতা কল্পচিত্র আঁকতে আমার প্রায় তিনদিন সময় লেগেছে যখনি ভাবি চিত্রকল্প ঠিক তখনই সেই অতীতে নিমগ্ন হই। এরই মধ্যে কবিতার শব্দ বিন্যাস করার সময় চোখে পড়লো কবি ও কাব্য বিশ্লেষক জনাব মার্শাল ইফতেখার আহমদ এর আমাকে নিয়ে একটি আলোচনা যার আনন্দ স্রোতধারায় সকল দুঃখ ভুলে সমাপ্ত হয় এই কবিতার চিত্রকল্পটি।)