যে দিন আমি অবজ্ঞাত!
সকলে মোরে অবহেলায় -
সুবাস-হীন ফুলের মতো;ছোড়ে দিল ফেলে
পথ-ধুলায়।
আমি ধূলিসাৎ পিষ্ট অবহেলে,
যবে আমি অনাদৃত!
চির নিঃসঙ্গ - নিঃস্ব একা-
রিক্ত হাহাকারে কাঁদি আমি ভাগ্যহতো।
আশা যবে -নিরাশ  যবে-অন্ত,
আমি আশাহতো!
সেই দুর্দিনে- অবেলায় -
পথ-ধারে পিষ্ট রসাশূন্য- মাধুর্যহীন,
ধূলিমাখা মলিন!
এ- ফুল তুলে নিলে বুকে অনন্ত প্রেমে।
ওগো প্রেমাবতী!
যবে আমি নব যৌবনের অন্তহীন কামনায়-
প্রবল তৃষ্ণার্থ; তৃষ্ণাতুর পাখিসম,
আকুতি-ভরা প্রাণ মম!
সেই দিন তুমি প্রিয়া-অচেনা চির-চেনা হয়ে,
এক সিন্ধু-সম রূপ-যৌবন-সুধা ল'য়ে-
তৃষ্ণা মেটাতে মোর এলে তুমি প্রিয় হয়ে-
ওগো প্রিয়জন!
আমি ধন্য! ধন্য মোর এ জীবন-
তোমাকে গো পেয়েছি -পেয়েছি নতুন ভুবন,
দেখেছি ঐ তব অপরূপ রূপ অনুপম সৌন্দর্য;
যত দেখি' তত হায়!  
তব যৌবন-সিন্ধু-জলে ডুবিয়া মরিতে চায়-
মোর তনু-মন।


ওগো অনুপমা!
দেখে ঐ মুখ-চন্দ্ৰিকা তব,
ঐ তব পীতবর্ণ দেহসৌষ্ঠব,
ঐ চোখের শায়ক-বেঁধা বাঁকা চাহনি,
বুকের পীন,ঐ কন্ঠে মধুস্বর ধ্বনি-
যেন বসন্তদূতের গীত,ঐ স্নেহভর থুতনি-
কিশলয়তুল্য কোমল অধরে, অধর-সুধা।
আমি মরি গো মরি!
ঐ তব রূপ দেখি' ওগো রূপ- সুন্দরী!
সেদিন ও-কি তব আদর!
বারেবারে মোর আঁখি-মুখ-ললাট চুম্বন,
যুগল অধরে ওষ্ঠে-মিলন।
ঐ অমৃত-সম পানে -
ভোগতৃষ্ণা ক্ষুধার্ত পাখি হ'লো ক্ষুধা-শান্ত।
চির প্রশান্ত!
আনন্দ-বিহ্বল আমি সুখচর!
সুখে বিভোর!
সুখনিদ্রায় যবে আমি স্বপ্নে একাকার-স্বপ্ন-মগ্ন,
নিদ্রা শেষ আঁখি খুলে চেয়ে দেখি-গৃহ শূন্য,
রহিলনা আর বুঝিবার বাকি -
অবশেষে তুমিও দিলে ফাঁকি।


হায়রে ভালোবাসা!
বেলাশেষে অবেলায় তুমি-ও দুরাশা
পাওয়ার বুকে না-পাওয়া বিরহী পাখির কান্না অশ্রু-হারা
দীর্ঘশ্বাস, বুকের বাম-পাশের পীড়া।
যুগে যুগে যারে আমি ভাসিয়াছি ভালো,
সেই আজ নিভিয়ে গেল মোর গৃহ-আলো।
অবশেষে আমি নিক্ষিপ্ত
আলো শেষে ঘুর-ঘুট্টি অন্ধকারে বিরহে
আমি চির বিরহী!
আহত পাখির মত প্রিয় - হারা গান গাহি
আমি শ্যাম-হারা বিরহী রাধা-রাই
কাদিঁয়া মরি মথুরায় জপিয়া কানাই!
দিবা যামী!


সংক্ষিপ্ত -