বধূবেশে এলে তুমি হেমন্তের হিম নিহারে,
শুকনো তৃণ-খড়ে ছাওয়া মোর কুঁড়ে ঘরে।
হে মোর সপ্ত জনমের সাথী!
এলে তুমি সুর-লোক থেকে নেমে মর্ত্যে,
এলে সুখ ছেড়ে ভাসতে বেদনার স্রোতে।
এলে দীন ভিখারির গৃহে সাজিতে ভিখারিনী -
হায় গো অভাগিনী!
কত নিশিতে ভাঙিল তব ঘুম উঠিলে জাগি,
উদরে জ্বলে ক্ষুধার মানিক আহারের লাগি।
হে ক্ষুধিতা! কত দীর্ঘ রজনী কাটালে উপবাসে,
দিবা-যামী কত ব্যাথা ফুটিল বুকে ঝরালে হেসে।
তুমাতেই দেখিছি আমি পতি প্রেমা সাবিত্রীর ছবি,
পতির হিত-কল্যাণে হিতৈষিণী ত্যাগিতে সবি।
পৌষের প্রবল শৈত্য-প্রবাহে যবে আমি শীতে কাতর,
উষ্ণে জড়ায়ে আমাকে প্রিয়া তুমি হলে হিম পাথর!
গ্রীষ্মের খরতাপে দাহ করি তব কায়,-
তপ্ত -ক্লিষ্টে দিলে মরুত অঞ্জলি মোর গায়।
তুমি এসেছ গো সতী-সাধবী রূপে জীবনে মোর সাথী ,
আমার আধাঁর গুণ্ঠিত জীবনে জ্বালাতে প্রেমময় সুখের দীপ্তি  ।
পুঞ্জীভূত রেখে শত আবদার যত শখ-সাধ দিয়ে বিসর্জন,
হেসেছ পুষ্পের হাসি! আড়াল করেছ না-পাওয়ার বেদন।
হে তাপস্বীনি, হে মোর অর্ধাঙ্গীনি ;
আমি চির ঋণী গো আমি চির ঋণী!!