( কবি মার্শাল ইফতেখার আহমদ এর " মিউট ইয়োরসেল্ফ" কবিতাটি পড়ে)


মহানন্দা, তোমার পড়নের মেটালিক-গ্রে কালারের শাড়ি
এবং ওয়াইন কালারের ব্লাউজ,
হাতের মধ্যে ম্যাচ করা ক্লাচ ব্যাগ,
উঁচু হিলের জুতো,চোখে হালকা কফি রঙের ফ্রেমের চশমা;
প্রত্যেকটি প্রসাধনী তোমারদেহসৌষ্ঠবে নিখুঁতভাবে মানিয়েছে ;
তোমার মতো এমন সৌকুমার্য লাবন্যময়ী কোন নারী
যদি সাজোগুজো করে বাহিরে বের হয়
পার্কে-উদ্যানে,বুড়িগঙ্গার তীরে,এই খোলা আকাশের নিচে_ একটু মুক্ত হাওয়া খেতে;
তবে স্বাভাবিকভাবে যে ফিরবে সে নিশ্চয়তা নেই
কোন ভয়ংকর জঙ্গলের ভিতরে হিংস্র পশুর মুখের গ্রাস থেকে -
ভাগ্যজোরে বেঁচে ফিরা হরিণীর রূপকথার গল্পের মতো;
অথবা হিংস্র পশুদের আঁচড়ে বিশেষ-বিশেষ অঙ্গে ক্ষত চিহ্ন নিয়ে রক্তস্নাত শরীরে ফিরে আসতে হবে ;


অবশ্য ধর্ষণ এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়!


তখন কি করবে?—আত্মহত্যা!
আইনি পদক্ষেপ নিবে?- ধর্ষণ মামলা!
মানব বন্ধন করে? -"ধর্ষকের শাস্তি চাই,শাস্তি চাই!"
বলে মিছিলে স্লোগান দিবে?
তাতে কি ধর্ষকের দ্রুত শাস্তি হবে?
হৃদয়ের রক্তাক্ত জখম চিহ্নচয় কি মুছে যাবে?
হারানো সম্ভ্রম কি কোন ধর্ষিতা ফিরে পাবে?


আমি এসব প্রশ্নের উত্তর আমি জানিনা!  জানিনা!!  জানিনা!!!


মহানন্দা,এখানে ন্যায়বিচার পাওয়া দুষ্কর!
উপযুক্ত দলিল ব্যতিত বোবা ঈশ্বরের মতো আদালত নিঃচুপ থাকে;
প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা ভয়ে কিংনবা লোভে মিথ্যা সাক্ষ্য দিবে!
মেডিক্যাল রিপোর্টে কোন চুট বা চিহ্নের উল্লেখই থাকবেনা ;
তদন্তকাররী কর্মকর্তার সুসজ্জিতভাবে প্রতিবেদনে ঘটনার সু-দীর্ঘ বর্ণনায়
অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকবে!


অবশেষে মিথ্যা মোকাদ্দমায় প্রতিয়মান হবে
আদালতকে বিব্রত করার দায়ে জরিমানা দণ্ডিত হতে পারে !  
সুতরাং সাবধান ! মুখ বন্ধ রেখে সবকিছু মেনে নেওয়াটাই শ্রেয়!
এরা ক্ষমতাসীন, এদের হাতে"সুপ্রিম পাওয়ার অব পলিটিক্যাল"!
এই ক্ষমতা যখন যে দলের হাতে থাকবে তাদের রাজনৈতিক সন্ত্রাসীরা
যখন যা খুশি তাই করবে,-এদেশের
সাধারণ জনতার ইজ্জত সম্পদ হরিলুট দিবে!
প্রয়োজনে তল্লাটে- তল্লাটে তান্ডব চালাবে ;
জোর খাটাবে, অত্যাচার করবে,
জমি দখল নিবে, চাদা চাইবে
এরা ক্ষমতাসীন, এরা সব করতে পারে!
মধ্যরাতে যে কারো বাসার দরজা লাথি মেরে ভেঙে
মাথায় রিভলবার টেকিয়ে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাপে;
ব্যাংকের চেকবইয়ের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে
স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি লিখে নিবে!  


খামকা ন্যায়-অন্যায়ের যুক্তিকষে যুক্তিবাদী সাজতে গিয়ে
কোন বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ো না;
অথবা এদের বিরুদ্ধাচারণ করে প্রতিবাদী হয়ে উঠার বৃথা চেষ্টা করে-
নিজে এবং পরিবার আত্মীয়স্বজনদের প্রাণ সংশয়ে ফেলোনা!
অযথা নিজের অস্বাভাবিক মৃত্যু ডেকে এনোনা!


এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে যদি  পত্র-পত্রিকা অথবা টিভি চ্যানেলের
কোন সাহসী ক্রাইম রিপোর্টার, রাজনৈতিক কলামিস্ট কিংবা প্রতিবাদী কবি
টকশোতে,কলামে কিংবা সাহিত্য পাতায় কিছু লিখেন, -
আগামীকাল সূর্যোদয়ের পর তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবেনা,
সাবধান এরা ক্ষমতাসীন !