রমণী রহস্যময়ী!  
জল- ছল-ছল তরঙ্গ অশিষ্ট-অশান্ত মহাসিন্ধু,
আবার অতি শিষ্ট-শান্ত দিঘিতে ফুল্ল অরবিন্দু।
এরা অগ্নিগিরির অগ্নি-তনয়া তেজস্বী বহ্নি-
ফের অনল-দহনে শীতল হিমানী।
রমণী মরুর সাহারা ধূ-ধূ তপ্ত বালুকা,
পুনঃ তপ্ত-বক্ষে প্রশান্ত আদ্র কুহেলিকা।
রমণী অপ্সরা-সুরসুন্দরী-নর্তকী অতি-নিচু মন ক্লেদাক্ত!
এদেরই মন বিপুল প্রান্তরসম বিস্তৃত আর নিঃসীম আকাশের মত প্রশস্ত।


রমণী-রহস্যময়ী!
রহস্যঘন আবরণে অবগুন্ঠিতা স্বর্গে-মর্ত্যে,  
যুগে যুগে রূপ ধারিনী বহুরূপি আদি-অন্তে।
ত্রিবেণী সৃষ্টি-স্থিতি-ধ্বংস!
এরাই পরমেশ্বরী উগ্র-চণ্ডিকা পতি -ঘাতিনী,
সতীসাধ্বী বেহুলা সাবিত্রী পতি-ব্রতা-পত্নী।
এরা দুর্ধর্ষ উত্তাল বায়ু অশনি কুলিশ মহা প্রলয়ঙ্কারী,
এরাই অনুদ্ধত ভব্য লক্ষ্মী -বীণাপাণি মহাশ্বেতা- সুরেশ্বরী।
এদের কেউ কেউ ডাইনি-রাক্ষসী-ইচ্ছাধারী সর্পিণী-
জগতে এদের মাঝেই আমাদের মাতা-কন্যা-ভগ্নি।
মায়া-মমতার বন্ধনে জড়ায়ে আছে মহা-মায়া বিচিত্রা,
এদেরই আগমনেই সৃষ্টি পেল তার পূর্নতা।


বন্ধু, শুননি পুরাণের বানী?
রমণী সৃজিল যে স্বয়ং স্রষ্টা সে ও জানেনা রহস্য কতখানি!
"বিশ্ব ব্ৰহ্মান্ড রুক্ষ উষ্ণ শ্রীহীন সৃজিল শ্রীলক্ষ্মী ধরার সৌভাগ্য শ্রী লাবণ্য শোভায়,
অগোচরে জন্মিল আগে অলক্ষ্মী দেবী-রমার  মুখ আভায়।
কুৎসিত অলক্ষ্মী আনিল আলস্য-ঈর্ষা-ক্রোধ-লোভ-ভাতৃদ্বন্দ্ব অমঙ্গল আছে যত,
গৃহ-সংসারে সুখ শান্তি আনিল লক্ষ্মী আসিল চড়ে পূণ্যের রথ।


শুভ-অশুভে মিশ্রিত নারী!
এদের এই লীলা চলছে জগৎজুড়ি ;
রমণীর প্রেমে-বিরহে কত কবি রচি' কত কাব্য পুরায়েছে কত কালি,
রমণীর রহস্য আজ জানেনি'ক এই কবি তবু তার তরে দেয় অঞ্জলি।