আপনারা দেখে নিন,— আমি সেই মানুষ !
আমার জীর্ণ-শীর্ণ ক্ষুধার্ত শরীরের  প্রত্যেকটি অস্থি সুস্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে
খানিকটা দূর থেকে দেখুন,-কেউ কাছে ঘেষবেন না!
আমার শূন্য পেটে যেভাবে ক্ষুধার প্রজ্বলিত শিখা দাউ-দাউ করে জ্বলছে;
উত্তপ্ত তাপে হয়তো আপনারা ঝলসে যেতে পারেন।


এই যে, আমার মাথা ভরতি আলুলায়িত রুক্ষ, অমসৃণ চুলের গুচ্ছগুলি দেখেছেন,—
যেন সদ্য ঝড়ের কবলে বিধ্বস্ত বনভূমির মধ্যে তিষ্ঠে-থাকা বৃক্ষের মতো খাড়া হয়ে আছে ;


আমার শরীরের উৎকট গন্ধে হয়তো আপনারা নাক রুদ্ধ করে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন!
অবশ্য এই সমবেত জনতার মধ্যে আমি কোন তাজা প্রাণ কিংবা জ্যান্ত মানুষের শরীরের ঘ্রাণ পাচ্ছিনা;
শ্মশানের পঁচা শবের গন্ধ শুকতে-শুকতে আমার ঘ্রাণেন্দ্রিয় আজ অকেজো!


আমি যে কালো চশমা পড়ে আছি তার সংবৃত
আমার জ্যোতিহীন দুটি চোখ— তবে জন্মগত নয়!
এই সমাজের কালো হাত,কালো-ব্যবসা,কালো-টাকা
দেখতে-দেখতে আমার দৃষ্টিশক্তি বিনষ্ট হয়ে গেছে।


শুনুন,- কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করবেন না!
আমার কর্ণকুহরে এখন আর কোন শব্দস্বর পৌঁছায় না।
বিগত অর্ধশত বৎসর ধরে মিথ্যা বক্তৃতা শুনতে-শুনতে  শ্রবণশক্তি নিঃক্রিয়।


আমার বাম হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুলটির দিকে তাকান?
এই যে দেখেছেন,- ডগা কাটা!
কিন্তু, ভূল করেও তা জানতে চাইবেন না?
বললে, -হয়তো আগামীকালকে আমাকে আর সনাক্ত করতে পারবেন না!