গল্প গগনের
////////////


বক্র তালে কোদাল কাঁধে
ঊর্ধ্বমুখে দুলকি চালে
চলছে গগন পা ফেলে।
স্বপ্ন ঝরা ভোরের সকাল
ডগমগিয়ে দিচ্ছে হাল
হেলে গরুর লেজটি মুড়ে
জিভ উল্টে টাক টাক
আওয়াজ তুলে
সোনার ফসল আসবে ঘরে
এই স্বপ্নে আছে ডুবে।
প্রতি কাঠায় দু মন করে
বিঘা দুই চাষ করে
জীবন কেটে যাবে হাসি খুশি
লক্ষী আসবে ঘরে।


হঠাৎ মাথায় পড়লো বাজ
পাড়ার লোকাল কমিটির
নেতা দিলো আওয়াজ।
যে জমিতে করছিস হাল
এটা ছিল তোর গতকাল
আজ থেকে এটা আমার।
হাইরোডের ধারে জমি
এ জমিতে  
মাল্টিপ্লেক্স বহুতল বাড়ি করবো আমি।
চাষার ছেলে তুই কি করবি
এত দামি জমি?
চাষ করবি খাবিদাবি
কলুর বলদ হয়ে বেঁচে থাকবি


চেঁচিয়ে উঠে বললো গগন
বাপ ঠাকুদার মাটি আমার
কেমন করে হয় তোমার?
জান থাকতে দেবোনা এই মাটি
সোনার থেকে দামি আর খাঁটি
কেঁদে কেঁদে বললো গ্রামে
লোকাল কমিটির নেতার নামে
কেউ শুনলো না তার কথা ব্যাথ্যা
সবাই শুধু থাকলো নির্বাক শ্রোতা।


ছ মাস পরে
সেই জমিতে উঠলো গড়ে
মাল্টিপ্লেক্স আর বহুতল বাড়ি
আর চাষা -
বাপ ছেলের কেউ পায়নি কোনো খবর
দেহ লোপাট !
পুঁড়িয়েছে ? না দিয়েছে কবর?
ফিরতি পথে চোখে পড়ে
মা ,দওয়ায় বসে ভাঙা ঘরের  
পরনে কালো পাড় সাদা শাড়ি
ঘরে নেই কোনো কানাকড়ি
ফ্যালফ্যালিয়ে থাকিয়ে থাকে
মা ও আজ মুক বধির  নির্বাক সর্বহারা
দিনেরাতে ঝরিয়ে যায়
দুই চোখে অঝোর অশ্রুধারা।