করিম চাচা
***********
ছোট্ট একটি খুদে ছেলে
মা বাবা গেছে ফেলে?
আজও অজানা সে কথা
জানে শুধু করিম চাচা


এঁদো গলিতে খেয়ে পোরে
বড়ো হলো চাচার ঘরে
খেলতে খেলতে গলির ছেলে
বন্ধু জুটালো সকালে বিকালে
স্কুলের পাঠ বিদেয় দিলো
বখাটে ছেলের সঙ্গ নিলো।
চিন্তা করে মরে চাচা
বিগড়ে যাচ্ছে প্রানের বাছা।


দিনে রাতে চাচা বোঝায় তাকে
আমার যত স্বপ্ন ঘিরে তোকে
জীবন ভর সময় যায়
মান সম্মান ক'জন পায়
ছেলে যেন সব বুঝেছে
মাথা নাড়ায় আগে পিছে।


ধীরে ধীরে বদলে গেল,
চাচার কাছে খবর এলো।
সঙ্গ দোষে দেশ দ্রোহে
চাচা এখনোও পুত্র মোহে।
ভর দুপুরে ঘরে পুলিশ এল
বলল মাদক পাচারে যুক্ত ছিল।
খুন জুলুমেরও আছে কেশ
আরও অনেক দোষে দোষী সে
চাচার  ত্রিভুবন ঘুরতে থাকে।
চারিদিকে কেমন ধোঁয়া দেখে
আদর যত্নে বড় করলাম কাকে?


একদিন রাতে ফিরতি পথে
দেখে কিছু যুবক মুখ ঢেকে।
টানা হ্যাঁচড়া করছে এক ষোড়শীকে।
দৃশ্য দেখে চাচা হাঁকিয়ে বলে
কে রে তোরা সৃষ্টিছাড়া ছেলে।
এগিয়ে চাচা মুখের ঢাকা দেখে খুলে।
প্রানের ছেলে জাফর আছে রাতের দলে
তিন চারটে বুলেট দিলো ঠুকে,
কিছু বুঝার আগে বিঁধল বুকে।


মরতে মরতে অনেক কষ্টে
বলে চাচা,
লোকের কথা কখনো বিশ্বাস
করিনি বাছা।
দেখলাম যা আজ রাতে
নিজের চোখে,
তোকে দেওয়া শিক্ষা মোর
সবই হলো মিছে।


মরার আগে জেনে যা-
গ্রামে মাস্টার ছিলো যত,
হাসান ছিল সর্বাপেক্ষা
সর্বজন বিদিত।
তুই ছিলি তারই ছেলে।
পথ দুর্ঘটনায় বাবা মা
তোর গেছে মরে।
সেদিন থেকে তুই আমার ঘরে।


অনেক কষ্ট বুকে সয়ে
মাস্টার করার স্বপ্ন নিয়ে,
দিনমজুরের ঠেলা ঠেলে
নিজের স্বপ্ন ছিলাম ভুলে।
চেষ্টা করেছিলাম মাস্টার
করব বলে।
মান ও হুশের বিকাশ হলো না
মাস্টারও হলিনা ব্যাট্যা
তোর কার্য্য কলাপে জীবনে
শুধু পেলাম ব্যাথ্যা।
ভালো থাকিস সুস্থ থাকিস
হাসান মাস্টারের কথা মনে রাখিস।