লেবু চোর
:::::::::::::::::::
দুপুর বেলা ঠা ঠা রোদ,
মেঘ নেই আজ আকাশে,
প্রখর তাপে শরীর জ্বলে
যেন লু বইছে বাতাসে।
সবার প্রাণ ওষ্ঠাগত
ত্রাহি ত্রাহি সব,
কচি কাঁচা বুড়ো বুড়ী গেল বুঝি
উঠেছে এক রব।


রাস্তা খালি,বাজার খালি
বোধয় সবাই আছে ঘরে,
আঁটো সাঁটো ঘর দুয়ার সব,
খিল দিয়েছে দ্বারে।


গলির মুখে জমেছে কিছু
কালো মাথার ভিড়,
ভিড়ের মাঝে কিল,ঘুষি লাথিতে
কে যেন করছে তিড়বিড়।


মেরে মেরে আধমরা হলো
প্রাণটা যাবে বোধয় এইবেলা।
কারো বোধের উন্মেষ হল না,
চলল মারের উপর
মারের খেলা।


জনতা আজ যেন পেয়েছে,
হাত সাফাইয়ের উপায়।
হব ভাব সব এমন দেখায়
করছে যেন কোন দেশ হিতৈষী কাজ।
দলে দলে ভিড়ছে সবাই
মারার পন্থা নিয়ে,
আমায় একটু জায়গাদে বাদ পড়েছি,
ভাবছি মারবো কি দিয়ে।


একটা বুড়ি পথ চারি,আশি বোধয় হবে
চেঁচিয়ে পড়ে পায়ে ধরে বলে,
ছেড়ে দে বোধয় বেঁচে যাবে।
কোলে তুলে রক্ত মুছে জিগ্যায় তারে বুড়ি।
কি হল কি করলি মারছে তোরে কেন
সবে লাঠি,থাপ্পড় ঘুষি।


রোদন চোখে রক্তে মিশে বলে ছোকরা তারে,
দুদিন হলো মা মোর আছে বিছানা ধরে,
উঠতে আজও নাহি পারে।
ডাক্তার বলে নুন লেবু জল
দিতে দু ঘন্টা পরে পরে।
তারি লাগিএকটি লেবু চুরি
করে ছিলাম গাছের থেকে।
ওই বাড়ির বুড়ো আর তার
ব্যাট্যা লোক জুটিয়ে মারতে থাকে।


বুড়ো আর বুড়োর ব্যাট্যা শুনলো
না মোর কোনো কথা,
ওরা বলে চোরের ব্যাট্যা
প্রাণটা নেব মেরে মেরে।
তুমিই বলো একটু স্যালাইন জল
দিলে মোর মা উঠবে সেরে।
সে কথা এদের বুঝাই আমি
কেমন করে।


দেশে তো হয় আরো কত
বড় বড় সব চুরি।
তাদের বেলায় কে মেরেছে
কে ধরেছে ডান্ডা কিংবা ছড়ি?