প্রানের সখা
////////////////
চাঁদের হাসি মলিন লাগে
স্বপ্ন গেছে ভেঙে।
চাওয়া পাওয়ার  দদ্দ্যুলদোলায়
ধীরে ধীরে যাচ্ছে সবই থেমে।
চলতে চলতে পায়ে পায়ে
অনেক বড়ো হয়ে গেছি।
এক্কা দুক্কা খেলার সাথী
কবেই ছেড়ে গেছি।


স্কুলের মাঠে এক পায়ে'তে ছুঁয়াছুঁয়ি
এখন স্মৃতির ঘরে।
আবেগ গুলো বদলে গেছে
চাওয়া পাওয়ার ভারে।
জীবন এখন চলছে বেগে,
লাভ-ক্ষতির হিসেব নিকেশ করে।


চলতে ফিরতে বাল্য স্মৃতি,
বন্দি এখন স্মৃতির অতল তলে
হাজার চেষ্টায় পাইনা ফিরে-
ব্যস্ত সবাই,ব্যস্ত জীবন
সবাই কেমন গেছে ভুলে।


শীতের দিনে,শীতের টানে
সবাই আজ ঘরের কোণে।
চলতি পথে,অদূরে এক পথের বাঁকে-
নয়ন মিলে তাকিয়ে দেখি,
কেউ একজন আছে পড়ে
পথের ধারে চাদর মুড়ে।


মনের মাঝে ভয় যে করে
পায়ে পায়ে এগিয়ে গিয়ে
ডাকি তারে।
গোঁ গোঁগিয়ে আওয়াজ আসে-
টেনে তারে দেখি যারে,
দাঁড়ি ভরা মুখটি তার
কোঁকিয়ে কোঁকিয়ে নিচ্ছে স্বাস।


আদর করে সুধাই তারে
বাপু নামটি কি তোমার?
নয়ন পানে তাকিয়ে দেখি
চোখ দুটো খুব চেনা চেনা আমার।


কোনো কথা না বাড়িয়ে
ধীরে ধীরে পা বাড়িয়ে
নিয়ে এলাম বাড়ি।
দুধ বিস্কুট খেতে দিয়ে
দেখলাম তার হাতের নাড়ি।
ধীরে ধীরে বাড়লো গতি
থিতু হলো প্রাণ।
কয়েক দিন পরে আবার
জিজ্ঞেস করলাম তার নাম।


অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে
শুধুই মুখের পানে।
কি ভাবে কি খোঁজে শুধু ওই
দাঁড়ি ওয়ালাই জানে?
আরো দু দিন কেটে গেল
আমার বসত ভিটের পরে।
হঠাৎ করে কানে এলো
কেউ যেন আমায় ডাকছে
নাম ধরে।


পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি
কেউ কোত্থাও নাই,
কে যেন ডাকলো মোরে
নামের আওয়াজ কেন তবে পাই?
হনহনিয়ে গেলাম ঘরে
দেখি দাঁড়িওয়ালা দাঁড়িয়ে
আছে আয়না খুপির বেড়া ধরে।
ভালো করে তাকিয়ে দেখি
এতো আমার বাল্য কালের সাথী।


অশ্রুঝরে দুজনার নয়ন দিয়ে
বাক্য রহিত জড়িয়ে ধরে।
অশ্রু জলে কাটলো সময়
কথায় কথায় ভাব বিনিময়
কেমন করে হলো দশা?


বৃদ্ধ বয়সের ভরণ পোষণ
কে আর নেবে এখন?
ছেলে-বউ দিলো বিদায়
মেয়েও একই পথ দেখাল সেবায়।


পড়ে রইলাম পথের ধারে
প্রাণ যাচ্ছিল শীতের ঘোরে
তোর সাথে হলো দেখা
ফিরে পেলাম প্রানের সখা।