সাগরিকা তৃতীয় পর্ব
:::::::::::::::::::::::::::::::::::::::


হরিহর,জানিস তোর দিদিমনি
কত গুণের অধিকারি।
খুব ভালো গান গায়
শাস্ত্রীয়,ক্লাসিক্যাল,গজল,ঠুমরি
আরো কত কি গান রবীন্দ্র সংগীত,আধুনিক,
আমি সব কি আর বুঝতে পারি।
কলেজের বাৎসরিক অনুঠানে
সবার মন ভরে যেত
তোর দিদি মণির গান শুনে।
চর্চা হতো সবার মুখে মুখে
তোর দিদিমণির গানে আর পরিবেশনে।


ও খুব ভালো টি টি খেলতে পারে,
দাদাবাবু টি টি কি ?
ওটা আমার বোঝার বাইরে।
আকাশ হেসে বলে ওটা কে
টেবিল টেনিস বলে।
একবার খেলার চূড়ান্ত পর্বে উঠে,
পড়ল পা পিছলে,বলল কি করব
বুঝতে পারছিনা এই পর্বে এসে।
বললাম সবই ঠিকঠাক যাচ্ছে
শুধু জুতোর তলায় কর্পূরের
প্রলেপ লাগিয়ে দিলেই হবে।


মুখ ভিনচে বলে রোগ হয় নি
যে করবো আয়ুর্বেদী।
জুতোর তলায় রোগই বটে
কর্পূর লাগিয়ে দাও
পিছলে পড়া যাবে বেঁচে।
খেলাটায় জিতে ছিল
তার পরে বিশ্বাস হলো।
বাবু ওসব এখন ইতিহাস
ভাগ্যে তোমার জুটেছে
দিদিমণি আর বিধাতার পরিহাস।


দেখতে দেখতে অনেক রাত্রি হলো।
গাং চিল,খড় হাঁস সাদা ডানার
শব্দ করে উড়ে গেল।
আকাশ আরাম কেদারায় দুলে দুলে
স্মৃতির মাঝে ডুব দিলো।


গত বছর বর্ষার সময় চারি দিকে জলময়।
শহর থেকে ফেরার পথে
কিছুদূর বাড়ির থেকে।
একটা জলধড়া সাপ পায়ে জড়িয়ে যায়।
কান্না কাটি চেঁচামেচি শুনে
সবাই ভীষণ ভয় পেয়ে যায়।
শ্যামলী কাকী ছাড়িয়ে দিয়ে
হেসে খায় গড়াগড়ি ।
ও বলল কাকী আমি ভয়ে মরে যাচ্ছি
যদি কিছু হতো বাড়াবাড়ি।


কাকী বলে শহুরে মেয়ে
বউ হয়েছে মোদের গ্রামে।
তোমার কিছু করবে কার এত
সাধ্য আছে সাহস আছে কার  প্রাণে?
তুমি যে মোদের গ্রামের পরি
সবার প্রাণ ভোমরা তুমি।
তোমার জন্য গ্রামের সবাই আছে
আর আছে এই শ্যামলী বুড়ি।
দিনে রাতে যা লাগে নির্ভয়ে তুমি বলতে পারো।
বিষাক্ত সাপেরও ওষুধ আছে
সময় করে একদিন তোমায় শেখাবো।


তিন দিন ভয়ে বিছানা ছাড়ল না সে
অবাক হলো সবাই।
কাকী বলে ও শহরের মেয়ে,
আর একটু সাহসী হতে হবে গো দিদিভাই।
এখানে আছে নানা সাপ,বোড়া,ঢড়া,
গোখরে,কেউটে,চিতি,শঙ্খ চুড়,
ক্ষরিষ আরো কত কি।
সময় করে একটু চিনে নিয়ো
কোনটা বিষাধর আর কোনটা বিষহীন।



ক্রমশ....….....................