সুবিনীতা
########
ব্যাথ্যা গুলো জমছে
জমছে স্তরে স্তরে ,
হিম হয়ে যাওয়া
অসাড় বক্ষ পিঞ্জরে ।
ঘনীভূত হতে হতে আজ
পাললিকে পরিণত ।
সময়ের পীড়ায় সোজা
মেরুদন্ড বক্র রেখায় উপনীত ।
উৎসাহ,উদ্দীপনা কবেই
গেছে মরে
অসময়ে যেদিন তুমি
গেলে দূরে সরে ।


তুমি জুঁই ভালোবেসে
লাগাতে খোঁপায় ,
ভেজা খোঁপা আর জুঁইয়ের
গন্ধ বাতাসে আজও
পাওয়া যায় ।
নীল ছাতা,আসমানী শাড়ী
পোরে যেতে গাঁয়ের পথে ।
নয়ন ভোরে দেখতাম তোমায়
বসে,বুড়ো বটের পাশে ।
হাজারো কথা দুঃখ ব্যাথ্যা,
অনাবিল মলিনতা,
ঘুরে ফিরে আসে বারে বারে
মনের দুয়ারে,মনে কি পড়ে সুবিনীতা ?
বাদল দিনে যেতে সখী সনে,
আঁকা বাঁকা মেঠো পথে -
পারুল নদীর গাঁয় ।
ধীবরের দল দিনে রাতে
আজও বৈঠা দিয়ে যায় ।
কাখে কলস,নপুর পায়ে
জলের ছলাৎ ছলাৎ,
দিনগুলো সব হারিয়ে গেছে,
চোখে আসে জল আজ ।


হাঁক দিয়ে ঐ বেনু কাকা
বলে আঁধার হলো ,
করো তাড়াতাড়ি -
খেয়া মোর আর যাবে না,
কূলে নেই কোনো তরী।
গোঁসাই ঠাকুর হাঁকিয়ে
বলে ওরে বেনু,
সবে গোধূলি,
মাঠে এখনো চরে বেড়ায় ধেনু ।
তড়ীঘড়ি করিস নে রে বাপ
পাড়ে রাখ তরী ।
বৃদ্ধ বয়সে পড়ে মরবো নাকি?
বাঁচাও মোরে হরি ।


সবই দৃশ্য চোখে পড়ে,
নিশি প্রহর শেষে ।
এক্কা, দুক্কা, পায়ে চড়ুই খেলে বেড়ায়,
সবুজ ঘাসের দেশে ।
শিশির ভেজা ধানের গোলায়
শালিক,শিশ দিয়ে যায়,
রাতের বেলায় লক্ষী পেঁচা
চোখ পাকিয়ে তাকায় ।
বাদল কালো ঘন মেঘে
বিজলি যায় ঘেঁষে
সরীসৃপের মতো কথা গুলো
বুকে বেড়ায় নেচে।


জীবন যুদ্ধে সবার আগে
বিদায় তুমি নিলে,
ঘর কুনো সব কাকা,কাকী,
আশায় দিন যে গুনে চলে ।
সময় চলে আপন মনে,
তাল নেইকো তার,
সবাই এখন ব্যাথ্যার
জীবন করছে পারাপার ।
পাশান বুকে সুর বেঁধেছে
আসবে ফিরে তুমি,
উঠবে ভোরে আবার
আলোয় আঁতুড় ঘরের ভূমি !