সুতনুকা
#######


সুদূর অতীতে,
কোনো এক অজানা গাঁয়ে,
আঁকা বাঁকা পথ বেয়ে,
অরণ্যের বুকে পায়ে পায়ে
পা ফেলেছিলাম দুজনে।


তোমার সাথে আমার বন্ধন
মহিরুহের গভীরে গাঢ় মূলে,
মাটির গভীর থেকে গভীরে


কখনই থাকতে চাইলেনা
জাগতিক বন্ধের বলয় রেখায়,
বলতে-আমি বন্ধনহীন ব্লগা
জীবনটা শুধুই গড়ের মাঠ ।


সন্ধ্যা হয়েছে-
আকাশ গেছে তারায় ভরে
তারাগুলো কখন ফিকে
কখনো জ্বলজ্বল করে
আপন খেয়ালে চলে?
অবাধ্য মেঘ ঢেকে দেয় ।


তারা গুলো গুনতে গুনতে
কখন সময় পেরিয়ে গেল,
কি অদ্ভুত এই রাত-
কখনো কাঁদায়, কখন ভাবায়
কখনো শেখায়-
অভিবাসন,অভিনন্দন,আচরণ।
কখনও কেড়ে নিয়ে যায় সবকিছু,
সবকিছু মন ,প্রাণ নশ্বরদেহ
আর প্রিয়জন ।


দূরে অনেক দূরে,
যেখান থেকে ফেরা যায় না,
ফিরিয়ে আনা যায় না।
তবুও নীল আকাশের নিচে
বসে কতজন স্বপ্ন দেখে
স্বপ্ন গড়ে প্রিয়জনের সাথে,
কেউ আহত কেউ পরাহত।


হিমেল হওয়ার পরশ
পাওয়ার আগে আমিও
চলে যাব একা,
যেমন করে গেলে
কালো রাত্রির মতো
কালো কাপড়ের চাদর
দিয়ে ঢেকে গেলে-সুতানুকা।


সুতনুকা-
ভারি মিষ্টি মেয়ে ছিল
সবার ছিল আদরের
আমার ছিলো একদম
একদম প্রানের।


তুমি বলতে-
আমার হৃদ স্পন্দন
বুঝতে পারো,
যদি দূরে থাকি।
আর তোমার হৃদ স্পন্দন
নাকি আমার পায়ের
ছন্দের সাথে খুব মিলে


দুজনে একসাথে বিকেলে
পায়ে পায়ে সময় কাটানো
তুমি বলতে ছোলাভাজা
খুবপ্রিয়,
ফুচকার দোকানে ভীষণ লাইন।


"শামখোল"ঝিলের পাড়ে বসে
ঢিল ছুঁড়ে ঢেউ গুনে মজা করা
একদিন-
ঘনকালো সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছিল,
ভয় পেয়ে বললে-
"আকাশ"তুমিও ভয় পাও?
খিলখিলিয়ে হেসে লুটোপুটি গেলে।
তর্ক করে আইসক্রিম খেলে
গলা ধরে গেল
তিনদিন কথা বলতে পারলেনা
ভালো করে।


বলতে আকাশ,
তোমার মনটা আকাশের
মতো বড়ভীষণ শান্ত,
তুমি বেপরোয়া নও।


আর বলতে
তোমার কাছে আমি
সুতনুকার চেয়ে-
তনুকা শুনতে বেশি ভালোবাসী।


সত্যি তনুকা,
তোমার আকাশ আজ
বাক্যহীন, ঘুমহীন,ভাষাহীন
শান্ত আরো আরো শান্ত,
বড্ড একা, শব্দ হীন।
প্রতিটি রাত শেখায়
অপেক্ষায় বাঁচতে বাঁচতে
মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে।


উঠোনে একটা গোলাপ গাছ
লাগিয়ে ছিলে,
বলতে গোলাপ আমার খুব প্রিয়,
গাছটা বেঁচে আছে
ডগায় শুধু দুটো পাতা-
বাকি শরীরটা শুকিয়ে গেছে।


আমিও চাইনা ফুল ফুটুক,
শুধু অপেক্ষায় থাকি
কখন ও চিরতরে শুকিয়ে যাবে।
যেমন অপেক্ষায় থাকে
বাগানের মালি
ফুল ফোটার জন্য ।