ভিন গ্রহের প্রাণী
।।।।।।।।।।।।।।।।।।।


জনতা-পাথচারীর ভিড় জমে উঠেছে।
জায়গাটাকে কালো মাথার ভিড় ঘিরে ধরছে।
কিছু উৎসুক মুখ ভিড় ঠেলে
মাথা গুঁজে এগিয়ে চলে।
প্রশ্নবাণ ধেয়ে আসে কি হয়েছে?
কি হলো?
দাদা একটু খুলে বলো।
আরো হাজারো উক্তি ব্যঙ্গক্তির ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
সবাই বলছে -
পাওয়া গেছে এক ভিন্ন গ্রহের প্রাণী
দেখতে অদ্ভুত
অদ্ভুত শরীরের গঠন প্রণালী।


চারিদিকে সাজোসাজো রব।
আলো আর ক্যামেরার ঝলকানি
নানা কোন থেকে নানান আলোক চিত্রের হাতছানি।
তারই মাঝে গলা ফাটানো গোংগানি।
কোনো কোনো চ্যানেল করছে
লাইভ সম্প্রচার-
আর সেই সংলাপ
সবার আগে আমারই আমাদের চ্যানেল
আপনাদের কে দেখাচ্ছে।
টিভির পর্দায় বারবার।


কিছু সময় পরে এলো দরদী রানী
কিছু ছাপোষা কর্তাব্যক্তি
আর সাথে কিছু মহাজ্ঞানী
হেরেক আলোচনা'র পরে
এলো রানীর অমৃত বাণী।
আমরা ভাগ্যবান-
আমরা পেয়েছি ভিন গ্রহের অমূল্য প্রাণী।
এটা আমরা ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠাচ্ছি ।
আমরা আশাবাদী
কিছু সুখবর আর আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।
এই প্রাণী থেকে অনেক কিছু জানতে পারবো।
তাদের চলন বলন স্বভাব বাঁচার প্রণালী।
আর আমাদের জীবন যাত্রার সাথে
আছে কোথায় কত মিল আর অমিল।


রানীর কথা শেষ হতেই প্রাণীটাকে
আদর যত্নে পাঠিয়ে দেওয়া হলো।
আবার এক বার আলোর ঝলকানি
যে ভেসে গেল রানীর মুখ আর অহংকারের বাণী।
ছাপোষা কর্তাব্যক্তিরা খুশিতে ডগমগ
হাত নেড়ে মাথা নেড়ে দিতে থাকে রানীর জয়ধ্বনি।


ভিড়ের অদূরে এক কোনে
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না ভেসে এলো কানে।
না তো কেউ তাকে চেনে
না তো কেউ তাকে জানে।
কারো চোখ পড়লো না।
সে যে একটা পাঁচ বছরের বাচ্চা।
যে শুধু তাকিয়ে রইলো ছুটে যাওয়া গাড়িটার দিকে।
সেই জানে এই পৃথিবীতে কত কষ্ট,
কত ব্যথা এখন তার বুকে।


তার কান্না কেউ বুঝলো না।
কেউ বুঝলো না-
ভিন গ্রহের প্রাণীটা ছিল তারা বাপ
এখন তার আপন কেউ আর রইলো না।
দুমাস না খেতে পেয়ে শুকিয়ে বাপ মারা গেল।
ভিন গ্রহের প্রাণী বলে অদ্ভুত তকমা পেল।