শিরোনামহীন
রীতেশ কর্মকার।


কবি,আপনার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আপনিইতো সেই কবি যে মানুষকে উদ্বুদ্ধ  করেন উত্তাল মিছিলে অংশগ্রহণ করার জন্যে,
আপনিইতো সেই কবি যার প্রবুদ্ধ ইশারায় নারীরা তাদের দাসত্বের শেকল ছুড়ে  ফেলছে,
আপনিইতো সেই কবি যিনি প্রতিটি শ্রমিককে রাস্তায় এনেছিলেন তাদের ন্যায্য হিস্যা বুঝে নিতে,
যারা উদোম গায়ে বুকচিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে প্রতিটি রাইফেলের সামনে চোখে আগুন মেখে।
আপনার লিখনিতে পাঞ্চজন্যের মত ভীষণ আওয়াজ,
যে কবিতার প্রতিটি শব্দে মিশে থাকে অধিকারের শ্লোগান,
প্রতিটি বিরাম চিহ্ন হয়ে উঠে একেকটি রবি নিয়োগী,শেখ মুজিব।
যা সমাজের প্রতিটি বোধহীন  মানসিকতার নখ কেটে নিচ্ছে  দুঃসাহসিক শব্দবাণে।
আপনাকে আজ হত্যা করা হবে ছিঁড়ে ফেলা হবে আপনার কবিতাকে,
আপনার সমস্ত পান্ডুলিপিকে পুড়িয়ে ফেলা হবে,নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে অনন্তকাল।
সমস্ত মানুষের মস্তিষ্ক থেকে মুছে ফেলা হবে আপনার সমস্ত কবিতার শিরোনাম।
তখনই আপনার মৃত্যু ঘটবে,আপনার নাম কালো তালিকাভুক্ত করা হবে,কেউ আপনার কবিতা পাঠ করলে তাকে পাঠানো হবে নির্বাসনে। এবার বলুন এরপরও কি আপনি কবিতা লিখবেন?
এতটুকু আত্মসম্মানবোধ নেই আপনার!
তারপর কবি লিখলেন মানুষের মুক্তির কবিতা
যে কবিতা পাঠে প্রকম্পিত হয়ে উঠল প্রতিটি দুঃ শাসনের দেয়াল।
সমস্ত কালো দেয়াল ধারণ করল রক্ত স্নাত প্রতিবাদ,
সমস্ত বাতাস ভারি হল  প্রতিবাদ প্রতিবাদে।
কবিকে হত্যার দিন ঠিক করা হল,
কবিকে আনা হল ফাঁসির মঞ্চে।
জাগ্রত জনতা গেয়ে উঠলেন মুক্তির গান,
মুক্তি চাই, মুক্তি চাই দিতে হবে,দিতে হবে, এ হত্যা মানিনা মানবোনা মানবোনা।