ওগো আমার বড় আদরের বৃষ্টি বৌঠান,
তুমি ছাড়া ফেটে চৌচির আমার উঠান।
এইতো সেদিন যখন তোমার হয়েছিল বিয়ে,
আমি বরযাত্রী গিয়েছিলাম ছাতা মাথায় দিয়ে।
মেঘের ঘোমটায় যখন তোমাকে দেখেছিলাম প্রথম,
আমি পেয়েছিলাম ভীষণ লজ্জা আর শরম।
তারপর যেদিন হল আমাদের প্রথম আলাপ,
আমার হাতে ছিল গরম চায়ের কাপ।
যখন তুমি টিপটিপ করে পড়তে অল্প,
তোমার সঙ্গে করতাম আমি আষাঢ়ে গল্প।
যখন তোমায় শাসন করতো দাদা শ্রাবণ,
তুমি দিনরাত কেঁদে কেঁদে ঘটাতে প্লাবন।
শরতের আগমনে যখন তুমি যেতে নাইওর,
খা খা করতো আমার বুকের ভিতর।
চালের নিচে রাখা পাত্রে তোমার জলতরঙ্গ,
মনে করিয়ে দিতো আমি নই নিঃসঙ্গ।
আমার কর্মব্যস্ততাই হোক কিংবা আমার অবসর,
তুমি ছিলে আমার সুখ দুঃখের দোসর।
শুঁকে সদ্যসিক্ত উত্তপ্ত মাটির সোঁদা গন্ধ,
আমি খুঁজে পেতাম আমার কবিতার ছন্দ।
আস্বাদন করতাম তোমার জলের ফোঁটার স্বাদ,
এই সমাজ দিলো তোমায় ব্যভিচারিণীর অপবাদ।
হঠাৎ আমার প্রতি অভিমান করে ভারী,
তুমি চলে গেলে আমাকে দিয়ে আড়ি।
কতদিন শুনিনা টিনের চালে তোমার শব্দ,
রাস্তাঘাট হয়ে গেছে শুনশান আর নিস্তব্ধ।
তোমার অনুপস্থিতিতে আজ চারিদিকে লেগেছে খরা,
শুকিয়ে গেছে খাল,বিল আর ছড়া।
তুমি শুনিয়ে গ্রীষ্ম থেকে মুক্তির ফরমান,
আমাকে করতে দাও তোমার বারিধারায় স্নান।
অতিসত্বর ফিরে এসো বৃষ্টি বৌদি গো,
তুমি ছাড়া বড্ড অসহায় তোমার ঠাকুরপো।
আমি নইতো রবীন্দ্রনাথ,তুমিও নও কাদম্বরী;
দয়া করে দিওনা তুমি গলায় দড়ি।
বলোনা তুমি কবে আবার আসবে বাড়ি?
তোমার জন্য কিনেছি ফুলিয়া তাঁতের শাড়ি।