হতাম যদি আমি কোন সময় রংমিস্ত্রি,
সুন্দর করে তুলতাম যা কিছু বিশ্রী।
আমার ঠিকানা হতো বাংলাদেশের রংপুর জেলা,
শিরিষ কাগজে ঘষে তুলতাম দালানের ময়লা।
গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদে বাঁধতে হতো বাঁশ,
বহুতলে রঙ করতে গিয়ে উঠতো নাভিশ্বাস।
যতই বেয়ে উপরে উঠতাম দিয়ে উঁকি,
ততই বেড়ে যেতো পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে দিতাম বিড়িতে টান,
ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে গাইতাম ফিল্মি গান।
হঠাৎ একদিন দেখা পেলে প্রাণ বন্ধুর,
তার সিঁথিতে আঁকতাম লাল রঙের সিন্দুর।
বিয়ের পরে প্রথম রঙ খেলার দিনে,
তার সঙ্গে রঙ খেলতাম আবির কিনে।
আমার কাজের শর্ত-হাজিরা কিংবা চুক্তি,
মালিকের পোষালে তবেই হতো আমার নিযুক্তি।
প্রথমে ঘরের সব দেওয়ালে লাগিয়ে প্রাইমার,
আনন্দে দিতাম প্লাস্টিক পেইন্ট কিংবা ডিস্টেম্পার।
সবাই যখন আমার ব্রাশের জাদুতে অবাক,
আমি তখন মুছতাম শরীরের রঙের দাগ।
থিনার দিয়ে দূর করে রঙের গাঢ়ত্ব,
আমার কিছুতেই দূর হতো না বেকারত্ব।
মানুষের বাড়ি রাঙিয়ে দিয়ে মনের মতন,
আমার দূর হতো না অভাব অনটন।
পুরানো বাড়িকে নতুন বানাতে করে রঙ,
আমার ঘরের টিনের চালে ধরতো জং।
রঙ যখন বদলে দেয় স্টেইনারের ফোঁটা,
আমিও যদি বদলাতে পারতাম আমার ভাগ্যটা।
দিনরাত নাকে ঢুকে বিষাক্ত রঙের গ্যাস,
আমার জীবনটা অকালেই হয়ে যেতো শেষ।