বাঁশের ছাপরা উপরে টিনের চাল,
জয়রাম স্টুডিও, প্রোঃ পুলিন পাল।
উঠানে খড়ের গাদা আর গরু,
পাশেই বয়ে চলেছে নদী সরু।
আঠালো কাদামাটি বোঝাই ভাঙা ঠেলাগাড়ি,
একা টানতে লাগে ভীষণ ভারী।
কুচক্রীরা করে তার জাল স্বাক্ষর,
মেরে দিয়েছে তার সরকারী ঘর।
গতবছর পৌষ মাস কিংবা মাঘে,
বউকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলো বাঘে।
একমাত্র ছেলে বোবা ও বধির,
তবুও সে প্রতিমা গড়তে অধীর।
বাঁশ, কাঠ আর খড়ের কাঠাম;
মাটির প্রলেপে মূর্তি হয় সুঠাম।
নিজের নিপুণ হাতে তুলির টান,
দিয়ে করে মহালয়ায় দেবীর চক্ষুদান।
কত আত্মত্যাগ, ধৈর্য্য আর নিষ্ঠা;
ফলস্বরূপ মাটির প্রতিমায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা।
লাল পাড়ের শাড়ি দিয়ে সযতনে,
মা কালীকে সাজায় মুণ্ডমালার রতনে।
মূর্তি অবিক্রিত থাকলে মিলবেনা টাকা,
বিক্রি হলে ঘরটা লাগে ফাঁকা।
প্রতিযোগিতার বাজারে ক'জন করে বায়না,
কাঁচামালের মূল্য আর পরিশ্রম পোষায়না।
কাগজ, প্লাস্টিক আর থার্মোকলের ভিড়ে;
তার দিকে তাকায়না কেউ ফিরে।
শেষ হয়ে গেলে পূজা-পার্বণের মরশুম,
তার চিন্তিত চোখে আসেনা ঘুম।
শিবরাত্রির সলতের মত করে টিমটিম,
জ্বলে নিভে পুলিন পালের পিদিম।