অভাবের অভিযোগ এনে ত্রিপুরার সঙ্গে ছিন্ন করলি নাড়ী,
সুযোগ-সুবিধার সন্ধানে বহিঃরাজ্যে গড়লি বাংলো বাড়ী।
যখন ফ্ল্যাটসংস্কৃতির গৃহবন্দী জীবনযাপনের চেষ্টা করিস,
তখন কেন কবুতরখানার চার দেওয়ালে মাথা ঠুকে মরিস?
যখন পরকীয়া ভাষায় কথা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে যাস,
তখন কেন হন্যে হয়ে নিজের খাস বাংলাকে খুঁজে বেড়াস?
যখন গ্রীষ্মের প্রখর দুপুরে টপ টপ করে পড়ে ঘামের জল,    
তখন কি তোর একবার মনে পড়েনা রুদিজলার নীরমহল?  
যখন বর্ষার কালো আকাশে চলে মেঘবৃষ্টির লুকোচুরি খেলা,  
তখন কি তুই মিস করিসনা চৌদ্দ দেবতাবাড়ির খার্চিমেলা?
যখন শরতের আগমনে শারদীয়ার আনন্দে থাকিস মশগুল,
তখন কি তোর চোখে ভাসেনা হাওড়া নদীতীরের কাশফুল?
যখন হেমন্তের পড়ন্ত বিকেলে পশ্চিম দিগন্তে ঢলে পড়ে রবি,
তখন কি তোর কল্পনার ক্যামেরায় তুলিসনা ছবিমুড়ার ছবি?
যখন শীতের সকালে গরম চায়ে চুমুক দিয়ে নিস উষ্ণ সুখ,
তখন কি তোর যেতে ইচ্ছে করেনা মকরসংক্রান্তির তীর্থমুখ?
যখন বসন্তের মৃদুমন্দ বাতাসে ঘুমের ঘোরে খাস লুটোপুটি,
তখন কি তোকে হাতছানি দিয়ে ডাকেনা ধ্যানমগ্ন ঊনকোটি?
যতই উঠিসনা কেন লতা হয়ে বেয়ে বিদেশী গাছের মাথায়,  
একদিন তোকে নেমে আসতে হবে শিকড়ের টানে ত্রিপুরায়।