আমি আমাকে বায়ু বলে সম্বোধন করি সহসা,
নিজেকে বায়ুর মতো দিগ্বিদিকজ্ঞান শূন্য বায়ু বলে মনে করি;
যেন আমি যেকোনো ক্ষণে যেকোনো স্থানে ছুটে যেতে পারি অনায়াসে,
যেন তীব্র উষ্ণতাকে ধারণ করতে পারি,কিংবা অতি শীতলতাকেও গ্রহণ করতে পারি।
অথবা কোনো সুঘ্রাণ শুষে নিয়ে হতে পারি সুগন্ধি বায়ু,
যে সুগন্ধি বায়ু পুলকিত করে দেয় সকল হৃদয়কে;
যদিও ঘ্রাণে বায়ু হয়ে যায় ভারী,
কিন্তু সুগন্ধি বায়ু  হালকা করে দেয় সকল,দুঃখ,চিন্তা ও ভয়কে।
কিংবা গ্রহণ করতে পারি ফুসফুস পঁচিয়ে দেয়া দুর্গন্ধ,
করে দিতে পারি সবার শ্বাসরুদ্ধ;
ভুলিয়ে দিতে পারি নিশ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ম,
নাসিকা হয়ে যেতে পারে বদ্ধ।
আমি হতে পারি কোমল মৃদু  শীতল আরামদায়ক বায়ু,
যা দেহ ভেদ করে হৃদয় ছুঁয়ে যাবে;
অজান্তেই ঠোঁটে মেখে দিয়ে যাবে প্রশান্তির হাসি,
তারপর কিছু না বলে আগমনের মতো না বলেই হারিয়ে যাবে।


আমি প্রবল ঝড়ো হাওয়াও হতে পারি,
ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতে পারি সব;
কয়েক যুগের মাটি আঁকড়ে ধরে থাকা সুবিশাল বৃক্ষকেও তুলে শূন্যে ভাসাতে পারি,
নির্বিঘ্নে বয়ে চলা জলকেও তুলে দিতে পারি আকাশে,
আকাশের মেঘেদের দিতে পারি টর্ণেডোর রূপ।


আমি প্রেমিকার দেহ ছুঁয়ে তাঁর ঘ্রাণ বেঞ্চির ওপাশে বসে থাকা প্রেমিকের নাসিকায় পৌঁছে দিতে পারি,
করে তুলতে পারি তাঁকে কামুক;
যতটা স্নেহ,প্রেম বিরাজ করতো তাঁর মনে,ততটাই কামনার সৃষ্টি হবে,
খুবই কাছে টেনে বাহু দ্বারা পিষ্ট করে সারিয়ে নেবে দূরত্বের অসুখ।


আমি দিগ্বিজয়ী,স্বাধীন অকুতোভয় বায়ু,
আমি নিগূঢ়,কারো কবলে পড়ি না আমি;
আমি একই সঙ্গে ধ্বংস ও প্রশান্তি,
আমি তাণ্ডব,আবার খুবই কোমল আমি।
আমি ঘুড়ি টেনে সুউচ্চে নিয়ে গিয়ে মানব মনকে আনন্দিত করেছি,
আমি শ্রান্তি দিয়েছি,আমি ভাঙচুর করেছি,আমি মেঘের ভেলা ঠেলেছি;আমি ফসল,ডাল,সমূলে নৃত্যে মাতিয়েছি।
আমি কুয়াশা হয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছি ভূপৃষ্ঠে,
দমকা ধাক্কায় পক্ব পত্রকে নামিয়ে এনেছে ভূপৃষ্ঠে।
আমার জন্ম নেই,আমার মৃত্যু নেই।আমি আমি ভূলোকে অবিনশ্বর।