সাড়ে বারোটার হাওড়া লোকাল-
শীত হোক, গ্রীষ্ম হোক কিংবা বর্ষা
একদিনও কামাই দেওয়া চলেনা।
অফিসবাবু নয়, ওটা ছ্যাঁচড়াবাবুদের সময়;
কামরার পর কামরা ঘুরে বেড়াই
সেইসব ছ্যাঁচড়াবাবুদের ধরবো বলে,
কিন্তু হাঁক শুনে লোকহাসি, চিমটি
আর মুখ চাওয়া-চাওয়ি হয়,
আসল কাজটা-ই হয়না কোনো কোনো দিন।
হতাশ হয়ে নেমে পড়ার আগে যদি
একবার শুনতে পাই-
" ঐ চুলকানির মলম …! "


গত আটবছর ধরে চুলকানির মলম
বিক্রি করে চলেছি আমি,
কতরকমের লোক, কতরকমের ব্যবহার,
কারোর শরীরে চুলকানি তো কারোর …।
পরিবার বলতে একমাত্র অবাধ্য ছেলেটা,
মা-মরা ছেলেটা পড়াশোনা লাটে তুলে
মাতাল-লম্পটদের দলে ভিড়েছিল,
কোনোরকমে মোবাইল সারানোর কাজে
লাগিয়েছি অনেক চেষ্টা-চরিত্রের পর।
ওর বন্ধুদের মুখে শুনেছি
ও নাকি ওর বাপকে আড়ালে বলে,
" শালা চুলকানির মলম …! "


সেবারের চামড়াগলানো গরমে
আমি পুরো প্লাটফর্মটা ছুটেছিলাম
জানলা থেকে একটা দশটাকার নোট
ধরবো বলে এই বয়সে …।
নোটটা চাকার নীচে পড়ে গেছিল,
আমি ঠিক করেছিলাম
আর কোনোদিন টাকার পিছনে ছুটবোনা।
কিন্তু এবারের গরমে আবার ছুটলাম,
আবার একটা দশটাকার জন্য,
মাথাটা ঘুরে গেল আর টাল
সামলাতে না পেরে কুন্ডলী পাকানো শরীর
" চুলকানির মলম যে …! "